কবিতাওরা ঝরে যাবে জেনে ছিঁড়ে নিয়েছিলে?
কবিইবনে শামস
উৎসর্গআগুনের প্রতিবেশী-কে
লিখার স্থানমোহাফেজখানা, চট্টগ্রাম
লিখার সময়ডিসেম্বর, ২০২১
3.7/5 - (4 votes)

জানি- ফোটা ফুল ঝরে যাবে; গন্ধ হারাবে পুষ্পবৃক্ষ।
নবকলিতে সাজাবে হৃদয়; জানি নবগন্ধে হবে মাতাল।

ড্রাগন ফলের টুকরাটার উপর কয়েকটা মাছির মরণপন যুদ্ধ। ঠিকে থাকার লড়াই দুর্বল করে তুলছে বেচে থাকার সমূহ সম্ভাবনাকে। কেউ সারাজীবন প্রিয়তমা থাকবে এই ভেবে ভালোবাসে না। ভালোবাসে তাই বাসে। রক্তের ভিতর উচ্ছ্বাস না থাকলেও ছুটে। সমস্ত পথের উপর ছড়ানো ছিটানো সুন্দর সুন্দর দুঃখগুলোকে খেয়ে নিবে সময়। রক্ত মূলত কি? ফুলকপিই তো। বাজারে বাজারে বিকে যাচ্ছে হাকানো দামে। তোমার সংসার থেকে একটা দারুচিনি ভিক্ষে দিয়ো। ওখানে মিশে আছে রক্তের স্বাদ।

ফুরাবেনা পুষ্পজন্ম, ফুরাবে গন্ধের নহর তবু জেনো
হারানো ফুলের বেদনা; গত গন্ধের দুঃখে হবে মাতাল।

আসো- আমরা তৈরি করি নিজেদের ব্যাক্তিগত কঙ্কাল। ফুলের সৌরভ আর আকার দিয়ে। গোলাপ নাকি ব্রেইলি রোডে ফোটা অসংখ্য রজনীগন্ধা? খোঁপাতে কোনটার ফিরে আসা কঙ্কালে প্রাণরূপ অনুভব দিবে? চলো, সমস্ত গোলাপের দোকান পুড়িয়ে ফেলি; আগুনেও দগ্ধ হয় যেমন হয় প্রেমে, পদ্মে এবং গন্ধের মহিমায়। আমাকে পুষ্পবিষে মারা হোক। অশ্রুপাতে আর চোখের শিরাবিন্যাসে সবুজ উদ্ভিদ বিস্তারিতভাবে প্রভাব ফেলছে। আকাশের পথগুলো সব রাখালের বাশির সুরের কাছে চূর্ণিত করছে অস্তিত্ব। আমি এখনও ভাবছি, পৃথিবী ধ্বংসের ঠিক কয়দিন পর আমি খোদার কাছে চেয়ে বসবো তোমাকে।

সন্ধ্যারাগ ঠোঁটে নামাচ্ছো অন্ধকার কার বুকে? জানি রাত
ফুরালে হাসিমুখ তোমার ছড়াবে আলো পৃথিবীতে ফের।

পাড়ি দিচ্ছি হাওয়া র্মমরের পথ। মেঘ আর নদীর মধ্যকার সম্পর্কের কথা ভেবে তুফান তুলছে মুখে যেসব বক; তাদের ধর্মে আমার কোন আস্থা নেই। ঘৃণার তাবিজে কখনো ফুলের মহিমা জন্মায় না। আমাদের এবার উঠতে হবে। ফের অবসর কানের পাশ দিয়ে ভনভন করে উড়ে গেছে। সিড়ির ধাপগুলো অস্থির, তোমার পদস্পর্শে আর ধ্বনিতে। আমার বুক হয়ে যাক সেই সিঁড়ি- তোমার গন্তব্যে পৌঁছানোর এক এবং অদ্বিতীয় সোপান। আকাশের গোপন সবগুলো পথ স্পষ্ট হতে থাকে কল্পনায়; ধ্বংসের তাণ্ডব বুকের ভিতর ঘুম পাড়িয়ে রাখে ভিখারির জপ। আমি কি হতে পারি, অশ্রুর মহিমান্বিত সেই পতন; যেখান থেকে ওঠে অভিশাপ কিংবা দোয়ার আয়াতগুলা।

হাতের উপর হাত তবু নদী থামে না; অতো দুঃখে রাঙানো
ফুলের উপর শিশির জমে না; তবু হাসির প্লাবন রুখে না।

(নোকতা: “ফুসফুসের ভিতর ঘুমায়ে পড়া ঘুঘু” পাণ্ডুলিপির কবিতা)

Share
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments