বুদ্ধদেব বসু

কে তুমি, সুন্দরী, যার বিন্দু-বিন্দু অশ্রু ঝ’রে ভেসে যায়পদ্ম হ’য়ে নদীর সচ্ছল স্রোতে অবিরল ?কোনসম্পূর্ণ

দিন মোর কর্মের প্রহারে পাংশু,রাত্রি মোর জ্বলন্ত জাগ্রত স্বপ্নে ।ধাতুর সংঘর্ষে জাগো, হে সুন্দর, শুভ্রসম্পূর্ণ

চক্ষে যার বহ্নিরাগ, বক্ষে যার সুমধুর কুসুম-সুষমা,অন্তরে লুকায়ে রেখো সংগোপনে সেই অন্তঃপুরচারিণীরে ;সৃষ্টির আনন্দ-মোহে রচিয়াছসম্পূর্ণ

ছোটো ঘরখানি মনে কি পড়ে,সুরঙ্গমা ?মনে কি পড়ে ? মনে কি পড়ে ?জানালায় নীল আকাশসম্পূর্ণ

নদীর বুকে বৃষ্টি পড়ে,জোয়ার এল জলে ;লুকিয়ে-রাখা আশার মতোবাঁশের ফাঁকে ইতস্ততএকটি-দুটি ম্লান জোনাকক্কচিৎ নেবে জ্বলেসম্পূর্ণ

পৃথিবীর শেষ সীমা যেইখানে, চারিদিকে খালি আকাশ ফাঁকা,আকাশের মুখে ঘুরে-ঘুরে যায় হাজার-হাজার তারার চাকা,যোজনের পরসম্পূর্ণ

যৌবনের উচ্ছ্বসিত সিন্ধুতটভূমেবসে আছি আমি ।দগ্ধ স্বর্ণ-রেণু-সম বালুকণারাশিলুটায় চরণ-প্রান্তে অকৃপণ বিপুল বৈভবে ।ঊর্দ্ধে মম রক্তিমসম্পূর্ণ

শুধু তা-ই পবিত্র, যা ব্যক্তিগত । গভীর সন্ধ্যায়নরম, আচ্ছন্ন আলো ; হলদে-ম্লান বইয়ের পাতারলুকোনো নক্ষত্রসম্পূর্ণ