স্বাধীনতা!
তোমাকে উচ্চারণ করতে
গিয়ে আমি আঁকি সেই রক্তের লালসূর্য;
যাকে একদিন বাংলার দামালেরা—
বাংলার পূর্ব দীগন্তে উদিত করতে
বাজিয়েছিল বিদ্রোহের রণতূর্য।
কত লাখো ভাইএর রক্তরুধির,
বোনের রক্তাক্ত আচঁলের নীর,
রাঙিয়েছে তোমার বৃত্তের আবীর!
কত মায়ের বুকফাঁটা ক্রন্দন,
সিক্ত করেছে তোমার অঙ্গন।
ইতিহাস বার বার ফিরে যায়—
সেই রক্তাক্ত বাস্তব আলেখ্য গাঁথায়—
তিপ্পান্ন বছর আগে
নীরব নিথর নিষ্কম্প সেই ভয়াল রাতে
তিমিরের সেই সর্বগ্রাসিতার অনুনাদে;
যখন বিষাক্ত শ্বাপদদের হাতে
নির্মম হত্যাযজ্ঞের দামামায়
কেঁপেছিল বাংলার আকাশ বাতাস।
মৃত্যুর মিছিলে জনপথ ছিল সয়লাব,
মুহুর্মুহু বিলাপের বাকহারা আর্তনাদ
প্রতিধ্বনিত হচ্ছিল মাটির কোনায় কোণায়।
রাতের বোবা আধফালি চাঁদ
মানুষরূপী হায়েনাদের বর্বরতার
সাক্ষী হয়ে স্ট্যাচু র মত ছিল দন্ডায়মান।
সেদিনের সেই নির্মমতার জবাব
ফিরিয়ে দিয়েছিল বাংলার মুক্তিসেনারা
নয় মাসের দীপ্ত অঙ্গীকারলিপিতে
ওদের তাজা রক্তের বিনিময়ে
ফিরিয়ে দিয়েছিল বাংলার বুকে
লাল সবুজে আঁকা মুক্তির কেতন
ওরা চেয়েছিল
স্বৈরশাসকদের শাসনে নিষ্পেশিত
বাংলার মজলুম কৃষক শ্রমিক,
সাধারণ মানুষের ক্ষুধার উষরতা দূর করতে,
মৌলিক অধিকার এর বঞ্চনা থেকে
তাদের মুক্তি দিতে
হে আমার চিরসবুজ ভাইরা
তোমরা নির্ভিক, দূর্জয়,
রক্তের লালে অভীক সেনা
মরণ তোমাদের করেনি লয়।
প্রাণের চেয়েও বেসেছ ভাল
জননী, জন্মভূমির মাটি,
তুচ্ছ করেছ অমরার আলো
স্বদেশকে জেনেছ খাঁটি।
তোমরা ঘুমাও অনেক শান্তিতে
তোমাদের রক্ত না হয় যেন বৃথা—
দেশের প্রয়োজনে রক্ত দিতে
না যেন করি দ্বিধা ।
প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম যেন
তোমাদের থেকে নেয় শিক্ষা;
স্বাধীন পতাকার সম্মান রাখা
হয় যেন মোদের প্রতিজ্ঞা।