নতুন প্রভাত
হে পৃথিবী
তোমার কঠিন কোমল কোলে,
একটি বছর চলে গেল,
কত ছবি হল সাদাকালো!
কত সহস্র অনুপলে গড়া,
কান্না হাসির গৌরবে ভরা,
প্রহরগুলো হল বিলীন।
তবুও মোর জনম জনমের ঋণ,
গাঁথা আছে তোমার অলিন্দে।
ঝরা ফুলের পাপড়িবৃন্দে,
আজও সেই সৌরভ ঝরে।
শক্তি যোগায় নতুন প্রহরে,
যত দিয়েছ শূন্যতা আমায়,
ততই ভরিয়ে দিয়েছ পূর্নতায়।
কাঁটা ভরা আধো আলো অয়নে,
আঁকিনি অবাঞ্ছিত স্বপ্ন অঞ্জন দুনয়নে।
তবু অনেক বেশি বৃষ্টি প্লাবনে
বেঁধেছি সুর জীবন সারথির সনে।
কখনও সরোদের সুর
মিলিয়ে গিয়েছে বহু দূর,
কখনও ঝিনুকের মুক্তোয় ঝরেছে ক্ষত,
স্বপ্ন মরালীর ডানা হয়েছে আহত।
ঝরেছে রক্তের ধারা ক্লান্ত তিথিতে
নীরব অভ্র মিশেছে কালো নীশিথে।
খরাঝরা প্রহরে হেটেছি যখন,
লুকিয়ে রেখেছি আঁধারের ক্রন্দন।
বন্ধুর পথে হেটেছি বহুদূর,
তবু ছাড়িনি স্বপনের সুর।
এত আবিলতা ভরা বাতাসে,
ধোঁয়ার কুন্ডলী চেপেছে যখন নিশ্বাসে
তোমার সীমান্তের শীতল ছায়ায়
ফিরেছি বারে বারে প্রগাঢ় মায়ায়।
নীল আঁচলে রূপালী মেঘের ভেলা,
মেঘও বৃষ্টির লুকোচুরির খেলা,
ভরা শশীর রাতে অতল নীল সাগরে,
সোনা ঝরা মোমের জোছনার চাদরে
ঝিলিমিলি ঊর্মির লুটোপুটি খেলা
মেঘের সাথে তারাদের সারাবেলা
হাতে হাত ধরে নেয়া জলের পরশ
চোখের পাতায় লেগে আছে
আজও সেই মিষ্টি রোদের হরষ!
অনেক অপ্রাপ্তির খাতা
ভরিয়ে দিয়েছেন বিধাতা
অনেক রঙ্গীন আলপনায়।
মৃদু মন্দ পায়ে চলা আঙ্গিনায়,
স্নাত হয়েছি হাজার বৃষ্টির পশলায়।
কষ্টের পোকাগুলো সরে গেছে গুটি গুটি পায়।
তাই প্রচন্ড ভালবাসি তোমায়!
এত ভালবাসা দিয়েছ আমায়
তবু আমি ভালোবেসে যাব তোমায়।
ক্রান্তি—সূর্যাস্তের আলো মেখে
প্রভাতের কাছে যাব মিনতি রেখে—
আমরা উড়াব অনেক ফানুষ
তুমি কী আমায় দিবে নির্মল মানুষ?
যখন বাদামী গাছ ফরিং রা
সব চলে যাবে বহুদূরে
শিশিরের মুক্তোগুলো ছুঁয়ে
বিহগেরা ডাকবে মায়াবী সুরে
কাঁটার আঘাত সয়ে ,
হিজল তমালের ছায়ায়
থাকব সেই মিষ্টি ভোরের অপেক্ষায়
স্বপ্নালোকে গাঁথা লালিত গৌরব
মর্তলোকের গভীরে ঝরাবে সেই সৌরভ।