কবি হয়ে মায়ের স্বপ্নকে কুরবানি দিয়েছি
আমাকে ডাক্তার বানাতে চেয়েছিলো; আমি তার চোখের জলে হ্যামলক বানিয়ে হয়ে উঠেছি পৃথিবীর হতাশাস্তম্ভ৷
বাবা এখনো কথা উঠলে মাকে খোঁচাতে ছাড়েনা, ‘ডাক্তার বানাবে ছেলেরে? হইছেতো ডাক্তার’। মা, চিরদুখিনী মা আমার পাকঘর গুছাতে গুছাতে যেই চোখের জল মুছতে আচল টানে হাত ফসকে পড়ে যাই আমি।
সামাজিক অনুষ্টানে অরুচি জন্মেছে সেই কবে থেকে। যেইবার
এক আত্মীয়া মাকে জিজ্ঞেস করতেছিলো ‘ছেলে কি পড়ে?’
মা মুখ ফিরিয়ে যেতে যেতে চোখের জলে লিখে দিচ্ছিলো আমার ভবিষ্যৎ।
ফালা তাক্বুল্লাহুমা উফ্ফিন ওয়ালা তানহারহুমা
এখনো মায়ের বুকে কবর খুঁড়ি
যে বুকের অমৃত পান করে আমি নিজেকে অস্তিত্ব দিয়েছি সেই বুক এখন স্বপ্নের গোরস্থান- জিয়ারতে গিয়ে মুখ ফুটে বলতে পারিনা –
রাব্বিরহামহুমা কামা রাব্বাইয়ানী সাগীরা
বাবা কখনো গর্ব করে বলতে পারেনি ‘ছেলে আমার ডাক্তার হয়েছে। মায়ের মুখ উজ্জ্বল করেছে ভরাপূর্ণিমার রাইতের চাঁন্দের লাহান’। কারো প্রশ্নের জওয়াবে ঝরেছে দীর্ঘশ্বাস,
মুখ ফিরিয়ে নিতে নিতে বলতে শুনেছি, তাকে মানুষ করতে পারিনি।
সিলিঙে ঝুলে যেতে যেতে আমিও লিখে দিয়ে যাচ্ছি
কবিসত্ত্বা এক অভিশাপ। মায়ের চোখের জলে যা লিখা হয়েছে।
কবি, চিনবেনা কখনো ভাসা চোখে, বারুদে মোড়ানো গোলাপ।
আমি তো চোখের পানিতে ‘আল জান্নাতু তাহতা আক্বদামুল উম্মাহাত’ মুছতে মুছতে রক্ত দিয়ে লিখে রেখে যাচ্ছি
‘নরক শুয়ে আছে মায়ের চোখের জলে।
মা তোমার স্বপ্নের গোরস্থানে দাফন করো, আমি ছেঁড়েছুড়ে আসছি যাবতীয় স্বর্গো