প্রিয় বকুল
দেয়ালের পাশ ঘেঁষে বিস্তীর্ণ কৃষ্ণচূড়া গাছের ফুলগুলো ক্রমশ ঝরে পরছে,
উঠোনের কোণে তোমার যত্ন করে রোপণ করা পাতা বাহার গাছগুলো; এখন আর বাহার ছড়ায় না!
জোৎস্না রাতে বারান্দায় দাঁড়িয়ে কফি খাওয়ার আমেজ আর টানে না,
তুমি চলে যাবার পর এই বাড়ীতে কখনো আর ফোটেনি রক্তজবা।
এই বাড়ী জুড়েই তোমার কতশত স্মৃতির জ্বল ফোঁটা,
গাছগুলোর হাজারও অভিযোগ রয়েছে তোমার চলে যাওয়ায়,
সব সময় মেতে থাকা ঘরে তুমি চলে যাওয়ার পরে এই নিস্তব্ধতা; আমাকে প্রতিবার মানসিক যন্ত্রণা দেয়।
জানতো, তুমি থাকতে কেমন সব কিছুই ভরে উঠতো
সূর্যটা কি ঝলমলে হয়ে উঠোনে পরতো,
প্রতিটি পূর্ণিমায়- ছাদটা জেনো তোমার অপেক্ষাই করতো,
অপেক্ষা করতো সব সময় একটি চাঁদ আরেকটি চাঁদের।
‘তুমি চলে যাবার পর, এই ঘর এই বাড়ী সব আমার অপরিচিত ‘
যত বছর কাটাচ্ছি তত বছরেই মনে হচ্ছে আমি এই বাড়ীর অপরিচিত কেউ,
আসবাবপত্রে ধূলো জমেছে অনেক,
আমি শুধু নিয়ম করে তোমার ছবিটা মুছে রাখি।
যে ঘরের দক্ষিণের জানালায় তুমুল গল্প হতো রোজ
গত কয়েক বছর ধরে এই জানালা বন্ধ,
বারান্দার দরোজায় খিল দিয়েছি সেই কবে
বদ্ধ ঘরে আবদ্ধ হয়ে একাকী দুঃখ জমাই
তা কি তুমি দেখো না?
তুমি কি বুঝনা এ মন কতটা আজও তোমায় চায়?
তীব্র শীতে শেষ কবে তোমায় জড়িয়ে ধরেছিলাম –
সেই অনুভূতিটা অন্ততঃ রেখে যেতে পারতে,
নাহয় আমাকে কোন এক শীতের রাতেই নিয়ে যেতে পারতে তোমার শহরে।