মুচকি হেসে
—— প্রতাপ মণ্ডল
এইতো সেদিন, স্পষ্ট এখনও
কাঁসির আওয়াজ, কাই মামা
বেচতো পিতল-কাঁসার বাসন
মাথায় নিয়ে বাঁশের ধামা…..।
বাক্স কাঁচের কাঁধে ঝোলানো
থাকতো তাতে সোনপাপড়ি,
ঘন্টা বাজিয়ে হাঁকতো জোরে
কি এমন আর আহামরি….!
“ফুটো ফাটা লোহার জিনিস”
উনুন মাথায় চলতো হেঁকে,
“শিল কাটাবে মা বোনেরা?”
সেদিনও তো বলতো ডেকে!
বাক্স বন্দী বায়স্কোপ টা
কলের গানে জীবন পেতো,
বুড়ো থেকে কচি কাঁচা
অমোঘ টানে ছুটে যেতো।
তালের ভেঁপু, রঙিন ফুল
আসতো তারা দুপুর বেলা,
গ্যাস বেলুনের গাড়ি নিয়ে
আসতো কত ফেরিওয়ালা!
কাঁধে ব্যাগ, হাতে ঝোলা
থাকতো তাতে তাঁতের শাড়ি,
হেঁকে যেতো পাড়ায় পাড়ায়
“কে নেবো গো শান্তিপুরি?”
গুড় বাদাম আর চ্যাপ্টা ছোলা
কারেন্ট নুন ও থাকতো ঠ্যালায়,
গরম কালের দুপুরবেলায়–
আইসক্রিম আর কুলপিমালাই।
মুখে দিলেই মিলিয়ে যেতো
গোলাপী রঙ বুড়ির চুল,
হাতে নিয়ে বেলের মালা
বাড়ি বাড়ি বেচতো ফুল।
ঝুড়ির ভিতর মাটির পুতুল
বাঁশিওয়ালার বাঁশের বাঁশি,
ছোট্ট বেহালায় করুন সুর
কচি কাঁচার ফুটতো হাসি।
হঠাৎ করেই ঘুম ভেঙে যায়
ডাকছে যেন ফেরিওয়ালা..!
মুচকি হেসে শুয়ে পড়ি
হারিয়ে গেছে ছোট্টবেলা।