কবিতাদৃষ্টিহীনের সঙ্গে যাপিত জীবন
কবিআজিজুল হক
বিষয়আশা, জীবনমুখী, প্রতিবাদ, প্রেম, ভারতবর্ষ, রাজনৈতিক, সমসাময়িক, স্বাধীনতা
উৎসর্গমাধবীলতা কে
লিখার স্থানকোচবিহার, পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ
3/5 - (2 votes)

তোমাকে বলতেই পারতাম
আমাদের ফেলে আসা দিনগুলো এখন আর আমাদের নেই
নক্ষত্র খচিত রাত বিচ্ছিন্ন দ্বীপে
বাসা বেঁধেছিল মানুষ খেকো বেডসিটের রক্তে ভেজা যাপিত জীবনে।

তোমাকে বলতেই পারতাম
ক্লিওপেট্রার সাপ লুডুর বিষাক্ত সম্পর্কের কথা,
গ্লাডিয়েটোরদের মৃত্যুকুপে বেঁচে উঠার অদম্য লড়াই
নুতন করে প্রেমে পড়ার অনুভূতির মতন।
নিস্তব্ধতা গ্রাস করে টুতেনখামেনের সমাধি কে।

তোমাকে বলতেই পারতাম
আমার আকাশে কতদিন একটিও তারা’ও ভালো ভাবে আলো জ্বালেনি
অনন্ত মহাকাশ জুড়ে

তোমাকে বলতেই পারতাম
আমাদের বসন্তে কালে তুমি আসলে আমার কাছে ছিলে না কখনও,
উদ্বাস্তুদের জীবনের প্রতি প্রেম আমার দীর্ঘ প্রতীক্ষাকে ক্রমশঃ করেছে নিঃসঙ্গ।

তোমাকে বলতেই পারতাম
চিলাপাতার গভীর অরন্যে
একাকী নিভৃত সন্ধ্যায়
আমি পরখ করছিলাম আমার চোখের জলে রক্তের দাগ,
সে দাগ লেগে আছে প্রাণ নিয়ে পালিয়ে আসা একজোড়া মৃগয়ার ছিন্নভিন্ন মিলনে।

তোমাকে বলতেই পারতাম
ফাল্গুনের যত যন্ত্রনার কথা,
পলাশের নিঃসঙ্গতার কথা
যে বসন্তে আমি নিঃসঙ্গ ছিলাম
আজকের মতো!
; অবিরত শ্রাবন ধারার অথৈ জলে পানকৌড়ির ডুব সাঁতার আমায়
খোশবাগের ভাগীরথীতে লুৎফান্নেষার চোখের জলে সিরাজের ফুলসেরাত পারাপারের
দৃশ্যান্তর!
আমার মৃত্যু কে দেখতে পেলাম
ভালোবেসে।

তোমাকে বলতেই পারতাম
আজানের সুরধ্বনিতে ভেসে আসার মধ্যেই
সঙ্গীতের প্রথম সুর ভেসে আসাটা সত্যি কি অস্বীকার করা যায়?
ফতোয়ার আওয়াজ ছেড়ে
ভালোবাসতেই পারতে রবীন্দ্র – নজরুলের মেলবন্ধন কে।

তোমাকে বলতেই পারতাম
নিঃসঙ্গ জীবনের একাকী ক্রন্দনের সেই বিষাদ রাতের
অসমাপ্ত ঘন্টাধ্বনিতে গির্জায় সমবেত প্রেমের উৎফুল্ল আলিঙ্গনের গল্প।
আমার মন তখনও তোমায় শুধু বলতে চেয়েছিলো
আর একটিবার ঈশ্বরের কাছে দুজনে একসাথে দাড়িয়ে
চিৎকার করে বলতাম
সীতা’রা পাতাল প্রবেশ করে না কখনও,
আসলে ওদের স্বপ্ন গুলো আত্মহত্যা করে….

Share
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments