কবিতাক্রমশঃ একলা হয়ে উঠার গল্প
কবিআজিজুল হক
বিষয়জীবনমুখী, প্রতিবাদ, প্রেম, বিরহ, ভারতবর্ষ, রাজনৈতিক, রূপক
উৎসর্গমাধবীলতা কে
সম্পৃক্ততাপ্রেমের জন্য
লিখার স্থানকোচবিহার, পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ
Review This Poem

তুমি লিখতে ‘ফেরেশতা আর ঈশ্বরের গল্প,
লিখতে কিছু ’
ভূতগ্রস্ত কবিতা বড় বড় অক্ষরে,
বিখ্যাত শিল্পীদের সঙ্গে তোমার উঠাবসা ছিল প্রতিনিয়ত,
সকলেই ছিলেন তোমার প্রেমিক!
আমি শুনতাম তোমার গল্প গুলো,
চোখ বুঝলে দেখতে পেতাম
বুকের মাঝখানে একটা কাঁটা দাগ,
আঙ্গুল দিয়ে চিরে দিয়েছিলে তুমি!
আমাকে কাঁদায়, বড্ড কাঁদায়,
অন্তত আমার স্পর্শে নির্ভরতা ছিল।
তুমি বলতে এসবে কি যায় আসে?
লুফে নিতে শেখো বিছানা থেকে জীবন!

আমি ইত:স্তত ঈর্ষান্বিত হই,
কারণ আমাদের কখনও দেখাই হয়নি,
একবার শুধু আমরা প্রেমে পড়েছিলাম,
ছুঁয়ে দেখা হয়নি তোমাকে,
অন্তত ছুঁয়ে দেখার ইচ্ছে থাকলেও!!
তোমার সান্নিধ্য ছিল মনের সাথে নয়,
কিছু বিখ্যাত রং তুলিতে আঁকা ছবি গুলোর সাথে,
তুমি বুঝতেই পারোনি বিছানার
রঙের সঙ্গে জীবনের রঙের
রসায়ন মেলে না অনেক সময়,
তাই তোমার কলমে উঠে এসেছিলো তারকাদের কথা।
তাদের সাথে বিছানায় শায়িত জীবন আর
রাত জেগে আকণ্ঠ গলার্ধকরণ!
আমি জানতাম
‘ফেরেশতা ও ঈশ্বর’ বিষয়ে লেখা গল্প গুলো তোমার অপ্রাপ্তির আফসোস থেকে বেরিয়ে আসা হতাশা,
কেন না আমি এও জানতাম
ঈশ্বরের মৃত্যু ঘটেছে
রাম রাজত্বের নামে সীতা কে আত্মহননে যেতে হয়েছিল মাতৃক্রোরে ”
আমি সেদিন আয়েশার চোখেও জল দেখেছি।

আমি বিখ্যাত হতে চাইনি,
অন্তত সে যোগ্যতা অর্জন করার প্রতিযোগিতায় আমি ছিলাম না কখনও,
তোমার গল্পে আমার ঠাঁই হয়নি,
আমাকে নিয়ে দু-কলম আঁচড় কাটেনি কেউ।
তুমি শরীর ছোঁয়ার গল্প বলতে,
বলতে শরীর তো সবাই ছুঁতে পারে,
মন ছুঁতে পারে ক’জনা!
আমি বলতাম, ওসব শরীর বেঁচার আষাঢ়ে গল্প,
কাব্যে হয়, ইতিহাসে ঠাঁই পায় না কখনও।

তোমার লেখা চিঠিগুলোর ভাষা তোমার মত দুর্ভেদ্য,
অন্তত যারা তোমায় কেউ বুঝতে পারেনি!
তুমি বলেছিলে
তোমার একটা কান্নার আসন ছিল,
তার চারপাশে ছিল হাদিসের আস্ফালন আর ঐতেরেয় ব্রাহ্মণের নাগপাশ।

আমি তোমাকে লিখেছিলাম একটা দীর্ঘ চিঠি!
ওতে ঈশ্বরের গল্প ছিল না,
ছিল নিতান্তই এক নির্বাক প্রেমিকের ক্রমশঃ একলা হয়ে যাবার তোমার দেয়া
নিষ্ঠুর দিনগুলোর পাণ্ডুলিপি।

Share
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments