আমাদের জীবনগুলো যাচ্ছেতাইভাবে যখন-তখন চুরি হয়ে যাচ্ছে,
প্রথমে চুরি হয়েছিলো মায়ের ভাতের থালা আর আলসেমীমাখা দুপুর,
বাবার তারুণ্যও চুরি হয়েছিলো কেরানি কলম আর বাজারের ব্যাগে লুকিয়ে,
তারপর চুরি হলো আমাদের শৈশবে, কৈশোরের সবুজ মাঠ,
তারপর বড় হতেই দেখি, প্রতিমুহূর্তেই সবকিছু চুরি হয়ে যাচ্ছে!
আমাদের ক্ষিধে চুরি হয়ে যায়, মঞ্চে দাঁড়ানো এক মিথ্যাবাদীর রাজনৈতিক ইশতেহারে,
সমস্ত শরীরে দগদগে ঘা হয়ে যায়, চিকিৎসা নামক মৌলিক অধিকার,
আমাদের স্কুল, কলেজ আর বিশ্ববিদ্যালয় চুরি হয়ে যায় মুদি দোকানের টালি খাতায়,
দৌড়াতে গিয়ে দেখি পায়ে কোনো জুতো নেই,
বুকপকেট খুঁজতে যেয়ে দেখি, আমার শরীরে কোনো সুতো নেই!
আমাদের অনুভূতি থেকে লজ্জা চুরি হয়নি বলে আমরা কোথাও লুকোতো যাই,
এঘর-সেঘর পেরিয়ে দেখি আমাদের কোনো ব্যক্তিগত ঘর নেই!
আলবৎ জানি, কখন কোথায় চুরি হয়ে গিয়েছিলো, আমার সমস্ত মৌলিক অধিকার!
কারা চুরি করে নেয় মানুষের জীবন, তাদের ঠিক চিনি,
ইচ্ছে করে কলার চেপে ধরি, ফিরিয়ে আনি চুরি যাওয়া পুরো একটা জীবন,
অথচ যারা চুরি করে নেয়, তারা কেবল হাসে, হায়েনার মতো অট্টহাসি হাসে,
একের পর এক প্রণয়ন করে জননিরাপত্তা আইন, ৫৭ ধারা,
বিচার বিভাগ পেছনে গুঁজে নিয়ে লেলিয়ে দেয় হিংস্র কুকুর,
ঘরের দাবীতে মিছিলে নেমে মানুষ মরে যায় গুলিতে, ক্ষুধায়, চিকিৎসাহীনতায়, অশিক্ষা আর বস্ত্রহীনতায় কেউ কেউ মিছিল হতে একটু দূরে দাঁড়িয়ে লজ্জায় মরে যায়!
2020-06-04