কবিতামহাকাল
কবিরাহাদ এইচ. শিশির
বিষয়প্রতিবাদ
4.3/5 - (3 votes)

মানুষের সঙ্গের চেয়ে নিজের নিঃসঙ্গতা আমার প্রিয়
যার সাথে আমি আমার মত বাঁচতে পারি
যে নিজেকে বিলিয়ে দিয়ে শোনে আমার গোপন কাব্য
যার মনয়ান্তরে ভরপুর কহতিয়া পুড়ার গল্প
সেই নিঃসঙ্গতা নিয়ে ঘুরতে বেরুলাম কাঁটার পাহাড়ে
হঠাৎ এক নির্জন গুহা আমাকে ডেকে নিলো
গিয়ে দেখি এক ভয়ার্ত সিংহ আমার ভোজনে
ভয় লুকাতে হিংস্রতা আমিও দেখালাম
সিংহ আমায় নিয়ে গেল এক কূপের দ্বারে।

সেখানে গিয়ে দেখি পঙ্খিরাজ ঘোড়া তার ডানা দিয়ে আগুনে বাতাস দিচ্ছে
মৌ মৌ করছে কেমন যে এক আধপোড়া গন্ধে
ভেতরে তাকিয়ে দেখি কিছু হরিণের মাথা কেটে সিদ্ধ করছে
দেখতে মানুষের শিশুর মত, কেমন যেন ডানা কাটা চিল উড়ছে।

আমাকে ডেকে নিয়ে বলছে এই দেখো অসুখ কারখানা
মরা মাছের ডানা গজাচ্ছে এই সৈনিকরা
আমায় এক গাদা অসুখ ধরিয়েছে বিক্রির জন্য
যদি বিক্রি করতে পারি তবে আমায় দিবে নাকি
মহামূল্যবান মহাকাল, যে কালে আমি আমার সাথে বাঁঁচবো।

আমি দৌড়ে পৃথীবিতে এসে দেখি এ যে আমার আগে থেকেই মহা অসুখে মগ্ন সবাই
সবার নিজস্ব অসুখের দোকান,
আমি বেঁচতে গিয়ে দেখি কারো নেই চোখ
কারো হ্নদপিন্ডে মহা উত্তাল, কারো ফুসফুস ক্ষয়ে গিয়েছে ক্যান্সারে
কারো মুখোশ খুলে দেখি সেই মরেছে বহুকাল আগে।

ছুটে পড়লাম অসুখের বড় বাজার হাসপাতালে
যদি কেউ সুস্থ হয় তার কাছে বিক্রি করবো বলে
গিয়ে দেখি শত শত বিছানা বিহীন কাতরাচ্ছে মরতে
ডাক্তারা খুনীর মত তাদের মরতে দেয় না
বাঁচিয়ে রেখে সহ্য করায় মহাশূন্য অনন্ত কষ্ট
পাপের শাস্তি এই মহাকালে।

আমি হতাশার চাদরে বন্ধু দশা মহামূল্যবান মহাকাল
আমার কি আর আমার সাথে বাঁচা হবে না
আমি আমাকে একা করেছি এই মহাবিশ্বের কাছে
এখন আমারও নিজস্ব অসুখ আছে।

Share
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments