কবিতাভাত
কবিফারহান নূর শান্ত
বিষয়জীবনমুখী, রূপক, সমসাময়িক
উৎসর্গপ্রতিটি ক্ষুদার্ত মানুষকে
লিখার স্থানময়মনসিংহ
5/5 - (1 vote)

এখন আমার দিকে,
ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছে এক থালা ভাত
আধখানা পেঁয়াজ,দুটো কাচা মরিচ আর
কড়াইয়ের তলায় লেগে থাকা চ্যাটচ্যাটে শুকনো ডাল।

ওতে একবেলা কারোর আহার জোটে,
কারোর তুচ্ছতাচ্ছিল্য ছুড়ে ফেলা
ডাস্টবিনের বুক থেকে মেলে,আধপাগলার খামচে ধরা ক্ষুধার জালার পরিত্রাণ ।

কয়েক মুঠো ভাত, একটা জীবন।
কারণ ও ভাত কটা জানে,
পেটের খিদে কতটা নির্মম।

ও একথালা ভাতের পেছনে কতগুলো গল্প থাকে,
কতো যন্ত্রণা, যুদ্ধ, হাতপায়ের পেশি, ঘাম কিংবা বেশ্যাবৃত্তি।

হ্যাঁ বেশ্যাবৃত্তি।
যে শিশুটা মা’য়ের বুকের দুধ খাচ্ছে, সে আদৌ জানেনা
রোজ রোজ সে স্তনে, শরীরের ভাঁজে
কতো লোকের কামনার স্পর্শ লাগছে ,
শুধু মাত্র,ক্ষুধা মেটানোর জন্য দুটো পয়সা পাবে বলে।

ক্ষুধার কতো ধরণ,
কারোর যৌনতার;
কারোর ভাতের!

একথালা ভাতের দিকে তাকিয়ে পুরো বিশ্বের ক্ষুদার্ত মানুষের হাত দেখা যায়।
সবাই ছুঁতে চাইছে,আঙ্গুল – কচলানোর সাধ
ভাত, এক মুঠো ভাত।

আমি ধীরে ধীরে সে ভাতের থালার দিকে এগিয়ে যাই,
দেখি!
এর জন্যই এত কষ্ট,
ধ্বংস তাণ্ডব, লোকের ছুটে চলা।
এর জন্যই মানুষের মরণ,
ডোবা থেকে ভেসে ওঠে হাড়গোড়।

ভাত তুমি অভিশপ্ত, কারোর কাছে আশীর্বাদ
একটু সহজলভ্য হলে কি হতো তোমার ?

আমার চোখ ভারী হয়ে আসে,
মুঠোয় করে ভাত মুখে নিই, খেতে পারিনা
নোনতা হয়ে গেছে।
হয়তো চোখের স্রোতধারায়।

© Farhan Noor Shanto

Share
guest
0 Comments
Inline Feedbacks
View all comments