মানুষের মানচিত্র ১৬
কোন কি প্রার্থনা নেই? কিছুই কি চাওয়ার নেই বিশ্বাসের কাছে? সংসার বিরাগি যেন একতারা হাতেসম্পূর্ণ
‘মানুষের মানচিত্র’ কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ এর কাব্যগ্রন্থ যেটি ১৯৮৪ সালে প্রকাশিত হয়।
১৯৬৬ সালে মোংলা থানার “সেন্টপলস উচ্চ বিদ্যালয়”– এ চতুর্থ শ্রেনীতে ভর্তি হন রুদ্র, এসময়ে পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন পত্রপত্রিকা পড়া ও কবিতা আবৃত্তির প্রতি তাঁর ঝোক দেখা যায়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, মোংলার মিঠেখালি গ্রামে নানাবাড়িতে কেটেছে রুদ্র ও তার সব ভাই-বোনের শৈশব। রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ এখানে বসেই লিখেছে ‘মানুষের মানচিত্র’, ‘হাড়েরও ঘরখানি’-সহ অসংখ্য কবিতা, গান বেঁধেছেন এই মিঠেখালির সোলানি রোদে বসে।
কোন কি প্রার্থনা নেই? কিছুই কি চাওয়ার নেই বিশ্বাসের কাছে? সংসার বিরাগি যেন একতারা হাতেসম্পূর্ণ
থামা, খানকির পোলা তোর ইলা-বিলা থামা। মানুষের ঢল
দ্যাখ নোনা দইরার মতো কূল ভেঙে কেমন গর্জায়ে ওঠে।
কেমন শিমুল দ্যাখ, রক্তজবা কিরকম রাঙা হয়ে ফোটে।সম্পূর্ণ
আমার লাটাই সুতা হাতে র’লো ঘুড্ডিখানা হারালো কোথায়? লিলুয়া বাতাস পেয়ে জীবনের স্বপ্ন-ঘুড়ি উড়ায়ে ছিলাম,সম্পূর্ণ
আঁখবনে ছায়া নড়ে।মধ্যরাত দুলে ওঠে শীতের বাতাসে। ছায়া নড়ে- এতোরাতে কার ছায়া? কুয়াশায় কাঁপে কারসম্পূর্ণ
বড়ো চেনা এই চোখ, ঘন ভুরু, এই রঙ শ্যামলা শরীর, এই ঠোঁট বড়ো চেনাসম্পূর্ণ
আহারে বৃষ্টির রা, সোহাগি লো, আমি থাকি দূর পরবাসে। কান্দে না তোমার বুকে একঝাঁক বুনোপাখিসম্পূর্ণ
পাখির নাহান ডাকো । মাঝরাতে ডাক দাও পাখির গলায় আমি কি বুঝি না ভাবো? কাতলাসম্পূর্ণ
মেম্বারের ছেলে দুটো ইশকুলে পড়ে,আমার হাঁড়িতে টান। বেশুমার দায় দেনা, খাওয়াইয়া সাতজন,পঙ্গু বাপ ঘরে, বেজাতসম্পূর্ণ
ভাসান যে দিতে চাও, কোন দেশে যাবা? যাবা সে কোন বন্দরে আমারে একেলা থুয়ে? এইসম্পূর্ণ
গেল বছরের দেনা এ-বছর নিয়ে গেল খোরাকির ধান। এই সনে দেনা হবে আরো, হালের বলদসম্পূর্ণ
কুটুম এসেছে ঘরে, সাঁচিপান সাজো বউ রুপোর বাটায়। চিরে মুড়ি আছে কিছু? নয়তো বাতাসা দাওসম্পূর্ণ
বনের হরিন নয়, বাঘ নয়, এতো রাতে চৌকিদার চলে। হোই কে যায়? কে যায়? গঞ্জেরসম্পূর্ণ