আমি কবি – সেই কবি
আমি কবি – সেই কবি,– আকাশে কাতর আঁখি তুলি হেরি ঝরা পালকের ছবি! আন্মনা আমিসম্পূর্ণ
ঝরা পালক, কবি জীবনানন্দ দাশের লেখা প্রথম কাব্যগ্রন্থ। ১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে (১৩৩৪ বঙ্গাব্দ) কলকাতার সিটি কলেজে টিউটরের চাকরি করার সময় জীবনানন্দ দাশ তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ঝরাপালক প্রকাশ করেন। প্রকাশক ছিলেন শ্রীসুধীরচন্দ্র সরকার, ৯০/২/এ হ্যারিসন রোড, কলিকাতা। গ্রন্থটি ছেপেছিলেন এ. চৌধুরী ফিনিক্স প্রিন্টিং ওয়ার্কস, ২৩ নং কালিদাস সিংহ লেন, কলিকাতা। প্রচ্ছদে পাখির আটিটি পালকের ছবি দেয়া ছিল। ক্রাউন সাইজে পাতার সংখ্যা ছিল ৮ + ৯৩। মূল্য রাখা হয়েছিল এক টাকা।
আমি কবি – সেই কবি,– আকাশে কাতর আঁখি তুলি হেরি ঝরা পালকের ছবি! আন্মনা আমিসম্পূর্ণ
একদিন খুঁজেছিনু যারে বকের পাখার ভিড়ে বাদলের গোধূলি-আঁধারে, মালতীলতার বনে, কদমের তলে, নিঝুম ঘুমের ঘাটে-কেয়াফুল,সম্পূর্ণ
-নব নবীনের লাগি প্রদীপ ধরিয়া আঁধারের বুকে আমার রয়েছি জাগি! ব্যর্থ পঙ্গু খর্ব প্রাণের বিকলসম্পূর্ণ
যৌবনের সুরাপাত্র গরল-মদির ঢালো নি অধরে তব, ধরা-মোহিনীর উর্ধ্বফণা মায়া-ভুজঙ্গিনী আসে নি তোমার কাম্য উরসেরসম্পূর্ণ
ধূম্র তপ্ত আঁধির কুয়াশা তরবারি দিয়ে চিরে সুন্দর দূর মরীচিকাতটে ছলনামায়ার তীরে ছুটে যায় দুটিসম্পূর্ণ
সরাইখানার গোলমাল আসে কানে, ঘরের সার্সি বাজে তাহাদের গানে, পর্দা যে উড়ে যায় তাদের হাসিরসম্পূর্ণ
কবে তব হৃদয়ের নদী বরি নিল অসম্বৃত সুনীল জলধি! সাগর-শকুন্ত-সম উল্লাসের রবে দূর সিন্ধু-ঝটিকার নভেসম্পূর্ণ
বনের চাতক বাঁধল বাসা মেঘের কিনারায়- মনের চাতক হারিয়ে গেল দূরের দুরাশায়! ফুঁপিয়ে ওঠে কাতরসম্পূর্ণ
ওরে কিশোর, বেঘোর ঘুমের বেহুঁশ হাওয়া ঠেলে পাতলা পাখা দিলি রে তোর দূর-দুরাশায় মেলে! ফেনারসম্পূর্ণ