দুপুররাতে শাশ্বত একটা দুঃখ আসন পেতে বসে থাকে চোখের করিডোরে
বহুমাত্রিক পঙক্তির বিহ্বল দু’চারটে সংলাপ নৈশব্দে সাঁতারকাটে অগাকান্ত মস্তকে-
বহুরাত বহুদিন আগে জলের সমুদ্র এঁকে
কে কারে রেখে গেছে মরু-উপত্যকায়?!
নক্ষত্রদের নিদ্রাকালে সংলগ্ন প্রান্তর থেকে দুঃখীসুরে ভেসে ভেসে আসে জলবিহগের গান
এতদিন এতরাত পর কার স্মরণে বিদুর নয়নে কে দেখে, কে দেখে
আঁধারের আলোকস্নান
২।
নয়-আষাঢ় আগের ঘুম হারিয়ে যাওয়া এক কৈশোর রাতে
চোখে নোঙ্গর করে বসেছিলো প্রেমিকার একঝাঁক রঙিন হস্তাক্ষর-
‘একখণ্ড জীবনানন্দ তোমাকে দিলাম, প্রিও
তুমি নিজস্ব কিছু স্বপ্ন দিও…’
সেই সুখ অথবা অসুখে অজস্র দিনরাত অনাগত সময়ের শরীর চষে চষে কেবল ধাতস্থ করেছি
‘আষাঢ়ের গল্প বলার বিদ্যে’
ওদিকে পিতামহের পিদিমের ঘ্রাণ মুছতে মুছতে ক্রমশঃ স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হয়ে ওঠেছে-
‘ধূসর পান্ডুলিপির একপাল শকুন’
এবং রূপকথার অধ্যায় শেষ না-হতেই পৃথিবীতে জেঁকে বসেছে বিষাদের ছায়া
পিপাসার গান
৩।
পিতামহের কালে এইসব আষাঢ়ি সন্ধ্যে ঘনতর হলে প্রকোষ্ঠে জ্বলে উঠতো বন্ধ্য পিদিম
জোনাক জলসায় বিহ্বল সংলাপে মুখরিত হতো
বালিকাবিরাতের মর্তাঙ্গন
ইদানীং মনে হয়
তোমাতে ডুবেছি আমি পিতামহের কালেরও বহুকাল বহুকাল আগে-
আমাদের পূর্বজ প্রাণহীনেরা তখনো দেখেনি
প্যালিওলিথিক সময়,
অষ্টম অবতার….
মনে হয় তোমারে দেখেছি আমি তারও শত সহস্র আলোকবর্ষ আগে
পবিত্রপ্রিজমে – দৈবদর্শনে…
৪।
তোমার অজস্র অনুযোগ কাধে নিয়ে নৈশব্দে অতিক্রম করছি সূর্যাস্তের পথ
পরাকরণের আগুনে নিয়ম করে ঢালছি অবজ্ঞার পারদ
অথচ ‘আমিময় শতাব্দীর শূন্যের দশককে’ তুমি তুলে রাখছো তোমার স্বর্গযুগের উপসর্গে”
‘জলজলসায় আবৃত্তি করছো কালের-গলদ!’
এইসব গল্পাবলী কানে এলে তোমারামার শূন্যের দশকের কছম কেটে বলতে ইচ্ছে করে-
‘এমন বিদঘুটে সমাপ্তি আমি চাইনি, অতন্দ্রিতা!
বিশ্বাস করো
বিশ্বাস করো