Review This Poem

আজের এই অপবিত্র রাতে কোনো পবিত্র বিশ্বাসেও বিশ্বাসী নই আর
আমি।তবুও শেষবারের জন্য হলেও,কবি,তুমি লিখো আর একবার
সেইসব হৃদয়ের গান যে সব গান নিয়েছে পক্ষ কেবলই নিখাদ মানবিকতার।
কবি,মানুষের সব চাপা পড়া ইতিহাস মানুষের অকথিত অব্যক্ত কান্নার।

অনেক যন্ত্রণার একটা পৃথিবী কিছুটা পিছনে ফেলে এগিয়েছি আমরা কিছু পথ,
এরই মাঝে করেছি প্রতি যুগে প্রতি যুগের নবজাতককে দেওয়ার শপথ
একটা সুন্দর সহজ সরল স্নিগ্ধ শান্ত সৌম্য পৃথিবী।লড়েওছি হাজার লড়াই,
তবুও প্রতি বসন্তে প্রতিবার কেঁদেছে মন চঞ্চলা চৈতালির অস্থির হাওয়ায়।

পারিনি দিতে সে পৃথিবী কোনো যুগের কোনো নবজাতককে আমরা আজও,
আর শিশু বলে আমাদের বিরুদ্ধে তোলেনি ওরা আজও একটা বিদ্রোহও
পৃথিবীর মাটিতে এখনও। ক্রমাগত আগত সেইদিন মেঘ পোড়াবে আগুন
আর সে আগুনের নীচে নিচে উড়বে আকাশে ভাগাড়-খোঁজা মাংসাশী শকুন।

নিরাশার সাগরে দাঁড়িয়ে গাইতে আমি পারবো না আশার কোনো গান
কবিতার শহরেও গিয়েছি,আর দেখেছি সেখানেও নেই এমন কোনো প্রাণ
যে প্রাণ কবিতা পড়ে আর।কোকিল এখনও হয়তো কাঁদবে কিছু যুগ;
একটা ভোগবাদী সভ্যতার ‘পরে সুখ আর ভোগের তরে আজ উঠেছে হুজুগ।

নির্লজ্জ লজ্জাবতীর লজ্জাও আজ নিজেকে বাঁচানোর নির্মম হাতিয়ার,
তাই যে বিশ্বাস করতাম সে বিশ্বাস দেখে শুনে করি না তাকে আর।
শুধু দুঃস্বপ্নে স্বপ্নের মতো কেটে যায় দিন। ঝাউপাতা,কই তোমার মতো
নিজের জন্য নিজের একার পৃথিবীতে একা একা বাস করি না তো।

সশরীরে আছি,শরীর জুড়ে রক্ত-মাংস-হাড়ের ভিতরে স্নায়ুর বুনোট বুনন;
যে কোনো বাথাতেই কেঁপে উঠে শরীর,নিশাতেই কাঁদে যুগ যুগ
নিশার গগন।
কতকাল কতদিন কোনো ফুলের বনে যাইনি,তুলিনি রম্য বন্য কোলাহল;
পাথরের পৃথিবীতে পৃথিবী যুগে যুগে দেখিয়েছে পেশি আর বাহুবল।

আসন্ন বৈশাখ বড়ো কথা নয়,বড়ো কথা বিদায়ী চঞ্চলা চৈতালি দুপুর–
জানি না,কোথাকার কোন লোভ আর লালসা এসে পৃথিবী জুড়ে চালালো ভাঙচুর
এত এত;সব হৃদয় ভেঙে গেছে শেয়াল আর কুকুরের উন্মাদ হুংকারে;
আজ কীটের মতো বেঁচে আছি সবাই আতঙ্ক আর অবিশ্বাসের তীব্র অন্ধকারে।

সন্ধ্যার ফুলেদের বলেছি সন্ধ্যাতেই ফুটতে,না ফুটতে গভীর রাতে–
বলেছি তাদের গভীর রাত নামার আগেই বৃন্ত হতে ঝরে যেতে।
গভীর রাতে হায়না বেরোয়,গভীর রাতে নিশাচর পাখিদের উৎপাত;
সন্ধ্যার ফুল তুমি,পারবে না সহিতে তাদের দেওয়া সব নির্মম আঘাত।

সন্ধ্যার ফুল তুমি,জানো না সকালবেলার মতোই শুভ্র গৌর সমুজ্জ্বল
রাখতে প্রতিটি সন্ধ্যা,পৃথিবী জুড়ে ঝরেছে চোখে চোখে কত অশ্রুজল।
সেই সন্ধ্যার ফুল তুমি, পবিত্র নিষ্পাপ নির্মোহ স্বপ্নের সোনার ফসল;
সন্ধ্যার ফুল,এখনও তুমি আমার নয়নের না-ঝরা দু-ফোঁটা অশ্রুজল।

guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments