একটি খোলা চিঠি
শ্রদ্ধেয় সম্পাদক সাহেব বিনম্র শ্রদ্ধা জানবেন
ইদানিং যা দিনকাল তাতে কারোরি ভালো থাকার অবকাশ নেই। একবিংশ শতাব্দির এ যান্ত্রিক সময়ে কে বা চিঠি লেখে কে বা পড়ে? আপনা কাজে ব্যস্ত সবাই। এখনতো ডাক একেবারে বন্ধ বলা চলে। বিজ্ঞানের যুগ। বিজ্ঞান মনে হয় কখনো আর্শিবাদ কখনো অভিশাপ। ইন্টারনেট, ফেসবুক, ট্যাংগো, ভাইবার, হোয়াটস অ্যাপ, ব্লগ- এসবের মাধ্যমে খবরাখবর ছড়িয়ে পড়ে দেশ-বিদেশের আনাচে-কানাচে। বিজ্ঞানের ভালো-মন্দ দুরকম ব্যবহারই হয়। টিন এজরা বেশি ধাবিত মন্দের দিকে। এসব বাদ। চলে যাই মূল কথায়- এই সময়ের দিনকাল অতি তিক্তের বড়ই কষ্টের। বেকারত্ব তারুণ্যের অভিশাপ বটে।
পেটের ক্ষুধায় মা বিছানায় শুয়ে আছেন জীর্ণশীর্ণ হয়ে।
সংসারের ভরণ পোষণ দূঃসাধ্য। আট পয়সার লাটের মতই কাটছে আমার সময়গুলো। যন্ত্র দিয়েছে বেগ কেড়ে নিয়েছে আবেগ/ অনুভূতি এখন সবই মেকি সবই কমার্শিয়াল। গতো পরশু সন্ধ্যায় বাবার মুখাগ্নি করেছি।
তখন শক্তি বাবুর কথা মনে পড়ে গেলো।
আগুনে তার মুখ পুড়েছে হঠাৎ যখন সন্ধ্যে
বাতাস খুঁটে গা খেয়েছে ফাঁক ভরাতে মন দে
পাঁচিল পড়বে টলে। শেষ রাতে তার সময় হলে
বাতাস বাঁধে ঝড়ের মাথা ধুলোবালির গন্ধে
আগুনে তার মুখ পুড়েছে হঠাৎ যখন সন্ধ্যে
তিনদিন গত না হতে-ই বিকেলে মা দুর্গার প্রতিমা বিসর্জন দিয়েছি তখন মনে পড়েছে-
জলের মধ্যে দেহটি তার মাছের দাঁতে কাটছে
উলুক ঝলুক শালুক ফুলের পাতায় দেহকাটছে।
আমাদের মতো মানুষদের নিয়ে নিয়তি দেবী ভালোই তামাশা করছেন। জানি না আমার সম্মুখ গন্তব্য কেমন হবে। বিষাদ সিন্দুর উত্তাল মহা ঊর্মির চাপে তলিয়ে যাবো।
অতি বেদনায় কখনো কখনো মুর্ছা যাই মনে পড়ে জীবনানন্দের কথা তিনি কি এক্সিডেন্ট করেছিলেন নাকি ট্রামের তলাই আপন প্রাণ বিসর্জন
দিয়ে সংসারের অভাব থেকে মুক্তি নিয়ে ছিলেন?
বনলতারা এখন নিশি রাতের প্রজাপতি সেজে রাত্রি যাপন করেন দেশ-বিদেশের নামি দামি হোটেলে।
আমাকে কেনো এসব চিন্তা গ্রাস করে?
সুশীলরা তো দিনে দ্রুপদীদের পক্ষে হয়ে সেমিনার করেন।
আর রাত হলে করেন দ্রুপদীদের বস্ত্র হরণ।
দিনে করে বস্ত্র দান
হরণ করে রাতে,
সমাজের দায়- ভার
দেবো কার হাতে?
এসব নতুন নয়, এসব আর কদিন চলবে?
কে দেবে এর জবাব?
অতি নগন্য একজন-
2021-12-26