ছিলানডা আইজকাও মন মতোন খাইবার দিলো না…’
ভোরবেলা খক খক কাশির গমক তুলে
অপরিতৃপ্ত হয়ে হেঁটে যাচ্ছে মধ্যবয়সী এক পুরুষ।
কুয়াশায় মোড়ানো সকালে সোনালি রোদের ঝলমলানো দেখতে উঠে চোখ গেলো
দিঘীর ঘাটে স্নান করা বৌদির দিকে।
গরম চায়ের কাপের মতো ধোঁয়া উড়ছে তার ভেজা শরীর থেকে। ভেজা চুল থেকে টুপ টুপ ঝরে পড়ছে যেনো জলপদ্ম,
শুদ্ধতার পবিত্র স্নানে শরীরে লেপটে থাকা শাড়ী, পায়ের জলছাপ, আঁচল সামলিয়ে ধীর পায়ে হেঁটে যেতে যেতে
আমাকে পুরুষ করে তুলতো প্রতিবার।
শীত এখন বিদায় নিয়েছে। হেমন্ত এসেছে ফের
তারপর গ্রীষ্ম, বর্ষা…
এভাবে কত ঋতু আসে আর যায়
শুভ্র সকালে বৌদির স্নান থামে না।
সেই দিঘীর ঘাট, স্নানের শাদাশাঁড়ি, ভেজা পায়ের কাঁকনধ্বনি
বেহায়ার মতো রোজ রোজ এসবে ডুবে যেতাম।
ডুবি ডুবি কেটে গেলো অনেকটা বেলা —
দিঘীর পাড়ঘেঁষা রাস্তাটায় একটা লোক
‘খাংকিমিয়ালা আইজকা আবার শরীলে জ্বর ধরাইছে-
অষুধের ট্যাকা তো ঠিকই লিয়া লিছস মাগী…’
বলতে বলতে মিলিয়ে গেলো ভোরের কুয়াশায়।
ধীরে ধীরে প্রভাত মেলেছে আঁখি, কিচ্ কিচ্ শব্দ করে নীড় ছাড়ছে পাখিরা, দিঘীর পাড়ে গিয়ে দাঁড়ালাম আমি, দু’টি পানকৌড়ি এসেছে ডুব-সাঁতার খেলতে। সবাই এসেছে, সবাই।
শুধু আজ বৌদি আসেনি স্নানে।