Review This Poem

দুপুরে শুন্‌শান্ হয়ে পড়ে থাকে হরি ঘোষ স্ট্রিট
যেন সাঁওতাল পরগনার কোনো ঘোলাটে জলের নদী
বাড়িগুলো বালিয়াড়ি, ভেতরে ধিকধিক করে জ্বলছে আগুন
তিন বাড়ির তিন ঝি মেছেতা পরা মুখে পরস্পরকে দুয়ো দেয়
তাদের হাতের ছোঁয়ায় অসভ্য বালকের মতন চিৎকার করে টিউকলটা
বাতাস দমকা হয়েই আবার ঝিমোয়, একটা শালপাতার ঠোঙা গড়িয়ে গেল
ভীম ঘোষ লেনে, স্বেচ্ছায় থামলো ঠিক আঁস্তাকুড়ের পাশে
অভয় গুহ রোড থেকে বাঁ দিকে বেঁকলো দুই রাজপুতানী বাসনওয়ালী
তাদের শাড়ির রঙের ঝলমলে ধাঁধিয়ে গেল সূর্যের চোখ
গোয়াবাগানের একটা কুকুর বেপাড়ায় চলে আসতেই দর্জিপাড়ার
মাস্তান কুকুরেরা তেড়ে গলে তাকে, সে বললো, আচ্ছা, দেখে নেবো!

দুদিক থেকে দুলে গাড়ি আর তিনটে রিকশা চলে যাবার পর আর কেউ নেই
শ্রীরঙ্গম থেকে বেরিয়ে এলো দুজন মানুষ, ধীর গম্ভীর পা ফেলে
এসে দাঁড়ালো রেলের সিটি বুকিং অফিসের সামনে, একজন ফর্সা ও বলিষ্ঠকায়
বাঁ হাতে ধুতির কোঁচা, অন্য হাতের সিগারেট ছুঁয়ে আছে অহংকারী ঠোঁট
অন্যজন বেশ লম্বা ও হাসিমাখা মুখ, চোখ দুটি অন্ধ
জুন মাসের রোদ ধুয়ে দিতে লাগলো সেই দুটি মানুষের শরীর
রূপবাণীর পাশের পানের দোকানে ঝ্যানঝ্যান করছে বেসুরো গান
দোতলা সবুজ বাসের পাঞ্জাবি কন্ডাকটর বাজিয়ে গেল বিকট বাজনা
সেই দুজন মানুষ যেন কিছুই পছন্দ করছে না, তারা অন্য দেশের মানুষ দু
জনে দুদিকে চলে যাবার আগে শিশির ভাদুড়ী বললেন কানা কেষ্টকে
কালকের দিনটা একটু দেখে নাও, তারপর পরশুর কথা ভাবা যাবে।
পাশেই দাঁড়ানো একটি এগারো বছরের ছেলের বুকে সেই কথা গেঁথে গেল
সারা জীবনের জন্য।

guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments