বৃদ্ধাশ্রম-ব্যথার আশ্রম
***********************
সুজিত কুমার ভৌমিক
***************************
জানালার ফাঁকে,মন অলি বাঁকে,
প্রতিদিন মত।
বৃদ্ধাশ্রমে,রামু ক্রমে ক্রমে,
পায় ব্যথা যত।
মনে মনে ভাবে,-“ছিল মোর সবে,
দুইছেলে এক মেয়ে।
জায়া চলে যেতে,বিপদ ও তাতে,
ভীমরুপে এল ছেয়ে।
কত ব্যথা নিয়ে,অনসন সয়ে,
করেছি ওদের মানুষ।
বড় গেল ভোটে,ছোট ব্যবসাতে,
জামাই টাকার ফানুষ।”
কিছু দিন যায়,দিন বদলায়,
ছোট হলো আলাদা।
বড় বলে-“তাই!,আমি ঘাস খাই?
আমি কেন হবো গাধা?”
রামু ভেবে হায়,কার কাছে যায়,
কে বা তার মনি।
বড় বলে ছোট,ছোট বলে খাটো,
জামাতাবতার শনি।
বড় ছেলে বলে,-“ভাই গেল চলে,
সময় ভালো ভায়ের।
করি দেশসেবা,পরে যাবে ভাবা,
এখন চিন্তা আয়ের।
বলিল ছোট,ব্যবসা খাটো,
আর নেই অতি লাভ।
চাপ এটি ওটির,জি.এস.টির,
আর আছে নেতা ভাব।
এসব দেখে,সব টাকা চেখে,
কিঞ্চিত থাকে মোর।
ঘর ছোট অতি,রেগে যাবে সতি,
তাতে নেই মোর জোর।
পরে বহুদিন,শেষে একদিন,
আশ্রয় হলো হেথা।
সেইদিন পরে,একযুগ ধরে
আছে,নিয়ে বুকে ব্যথা।
একদিন তার,শুনে ‘সভা’ যার,
মস্ত এক বড় নেতা।
চারিদিক ঘেরা,সুরক্ষায় মোড়া,
সবে বলে তারে ত্রাতা।
কেউ বলে নেতা,কেউ বলে ভ্রাতা,
কেউ বলে ভগবান।
রামু মনে ভাবে,সে ও আজ যাবে।
কাড়তে সম্মান।
সভা হলো শুরু,বুক দুরুদুরু,
রামু গেল ভিড়ে ঢুকে।
নেতা বলে -“শোন,ভয় নেই কোন,
আমি আছি বুকে বুকে।
আমি তোমাদের,মনের প্রানের,
তোমাদের লোক আমি।
পিতার যেমন,নন্দন তেমন,
সব বিপদের স্বামী।”
রামু সব শুনে,শির তুলি ক্ষনে,
বলে-“চুপ,চুপ চুপ।
তোর অভিনয়,বড় জ্বালাময়,
দু-নম্বরী এক ধূপ।”
রে-রে করে এসে,জনগন শেষে,
বলে -“একে মার দেখি।
বিরোধীর বেশে,একী ছদ্মবেশে!
চুপ করে বসে একী!
নেতা এল কাছে,বল নিয়ে পাশে,
রেগে মেগে বাহু জমি।
চমকিয়া ওঠে,দাঁতে দাঁত ঠোঁটে,
মনে ভাবে -“পিতা তুমি!”
চুপ করে ভাবে,কী বা করা যাবে?
দেব নাকি পরিচয়?
না-না,না-না,না-না,মন করে মানা,
রাজনীতি মহাশয়!
বিড়বিড় করে,চুপ করে ঘুরে,
গাড়ী দিল একছুট।
পিতা হেসে ভাবে,-“ছিঃছিঃ,বলি সবে,
থুঃ, সন্তান সব ঝুট।