মৃত্যুর হাতছানি
******************
সুজিত কুমার ভৌমিক
ঘুমিয়ে আছি রাতের কোলে,
স্বপ্ন চোখে নিয়ে।
হঠাৎ যেন পাশে এল
কেউ ফিসিফিসিয়ে।
অঘোরে মুই বলিলাম তারে
“কে রে তুই ওরে?”
বলিল আমি -“মৃত্যু,
আমায় জানিস নেরে?”
পা ধরে আমি বলিলাম তারে,
“যাবোনা আমি এখন।
অনেক কাজ বাকি আমার,
হলে যাবো তখন।
দুই মেয়ের বিয়ে দেবো,
আসবে দুই জামাই।
সানাই বাজবে,বাজবে ব্যান্ড,
তাথোই, থই,মাভোই।
তারপরেতে রাজনীতিবিদ
সমাজসেবায় মন।
হাত নাড়িয়ে নেতা হব,
শুভ্রবসন পন।
ছেলের বিয়ে দেব এবার,
আসবে এক নাতি।
না-রে,না-রে,ওলে ওলে বাবা,
স্বর্গে দেবে বাতি।
নাতির যখন হবে এক
লম্বা চওড়া গোঁফ…”
ধমক দিয়ে মৃত্যু বলল-
” চুপ চুপ চুপ চোপ্।
ওরে মূর্খ, অপদার্থ,
এ সবি তোর মায়া।
কেউ যে কারোর নয়,
এ সবই ফাঁপা ছায়া।
এসেছিলি তুই এই ভবতে
হয়ে শূন্য একা।
যেতে ও হবে সব ছেড়ে ছুড়ে
নীল শূন্য ফাঁকা।
চল চল চল যেতেই হবে,
আর নেই তোর সময়।
জীবন শুধু ফাঁপা বেলুন,
শুধুই মায়াময়।
পায়ে পড়ে বলি করোজোড়ে-
” দাও কিছু আর সন।
আচ্ছা,কটা মাস,কটা দিন,
তারপর যাব ক্ষন।”
শুনল না মোকে,চুটি ধরে,
হিড় হিড় করি টানে।
কেঁদে কেঁদে বলি -“মৃত্যু!
তাকাও আমার পানে।”
তাকাল সে বজ্রভাবে,
ভয়ে ভয়ে আমি দেখি।
মনে মনে ভাবি -“ওরে জায়া!
ভুলে যাও পতিপাখি।”
চোখ খুলে দেখি, কোথায় মৃত্যু?
আছি আমি একা পড়ে!
আমার ঘরে,আমার রুমে,
মিলে মিশে পরিবারে।
বুঝিলাম আমি জীবন অসাড়,
মৃত্যুর হাতছানি।
যেকোন সময় ঈশারা করে,
জীবন নেবে টানি।