রবীন্দ্ররচনাবলীর নবম খন্ড দিয়ে চাপা দেওয়া সুইসাইড নোট,
ছেলেকে লেখা । লিখে, হাতে ব্লেড নিয়ে
বাথরুমে ঢুকেছিলেন মাস্টারমশাই
দুপুরবেলা কাজের লোক দরজার তলা দিয়ে
রক্ত আসছে দেখে চিত্কার করে ওঠে ।
ছেলেকে লেখা এই তার প্রথম এবং শেষ চিঠি :
‘অরণি,
আমি বিশ্বাস করি সন্তান পবিত্র জলের মতো
যদিও তোমার সঙ্গে আমার সম্পর্ক ভালো নয়
তবু তোমাকেই লিখে রেখে যাই
গত দু’বছর তোমার মায়ের চিকিত্সাবাবদ
আমার যত্সামান্য সঞ্চয় আপাতত নিঃশেষিত
চিকিত্সার ব্যয়ভার আমি আর নিতে পারছিলাম না ।
জীবনে তোমার টাকা ছুঁইনি, মরেও ছোঁব না ।
আমি আজীবন ছাত্র পড়িয়েছি, জ্ঞানত কোনও অন্যায় করিনি ।
গত মাসে আমার স্কুলে এক অভিভাবক এসে
ঝুলোঝুলি করেন তাঁর ছেলেকে নেবার জন্য
আমি প্রথম দিন ফিরিয়ে দিই
দ্বিতীয় দিন ফিরিয়ে দিই
তৃতীয় দিন পারিনি । তিনি আমাকে একটা বড় খামে
তিরিশ হাজার টাকা দিয়ে চলে যান ।
সেই টাকায় এই মাসে তোমার মায়ের চিকিত্সা চলছে
জানি না তিনি বাড়ি ফিরবেন কি না কোনও দিন
ফিরলে বোলো, পৃথিবীতে আমার বেঁচে থাকার অধিকার চলে গেছে ।
ইতি বাবা’
যখন সারাটা দেশ দাঁড়িয়ে আছে টাকার ওপর
তখন রবীন্দ্ররচনাবলী দিয়ে চাপা দেওয়া একটা সুইসাইড নোট ।
হাসপাতালে গাছের তলায় গা ছমছম করছিল
এগিয়ে গেলাম সাদা কাপড়ে ঢাকা মাস্টারমশাইয়ের দিকে
একটু বেরিয়ে থাকা পা দুটোর দিকে —
ওই একটু বেরিয়ে থাকা পা দুটি যেন ভারতবর্ষের শেষ মাটি ।
I like the kabita but it mostly sounds like a story
এখানে গুরুত্বপূর্ণ একটা শব্দ বাদ পড়েছে শেষের প্যারায়। ঘুষ শব্দটি লেখা হয়নি শেষের প্যারার প্রথম লাইনযখন সারাটা দেশ দাঁড়িয়ে আছে ঘুষের টাকার ওপরে