3.7/5 - (4 votes)

সবটা শেষ দেখবো বলে
ছুটতে ছুটতে গৌধূলী পেরোই।
আক্ষেপের সুর বাড়ায় — এগারোসিন্ধুর হুইসেল।
যাদের সাথে বগিতে উঠবার কথা
তাদের ইতস্তত উচাটান আমাকে বিদায় দিচ্ছে ;
আমি নিচ্ছিনে বিদায়।

মা ব্যাগ গোছান ধীরস্থির — “আরেকটা দিন থেকে যা”
বাবা বরাবরই নীরব। ষ্টেশনে অপেক্ষা যাত্রার — আচমকা বলে উঠলেন “একদিন পরেই না হয় যেতে”
দক্ষিণা হাওয়া আমার বুকে তখন চিনচিনে লাগতো।
ফেরবার যে বড় তাড়া!

আমার কৈশোর বড় আদ্র ছিলো।
দুঃখ পেলে সবাই কাঁদে ; আমি একটু বেশিই কাঁদতাম।
করুণ কোন উপন্যাস
আঁতে ঘা লাগা কথা
বাবার শুকনো মুখ —
সবটাতেই আমার কান্না পেতো। বাবাকে কাঁদতে দেখিনি, তাই আমিও আটকে রাখতে চাইতাম।
তারপর —
একদিন
মাথায় হাত বুলিয়ে উনি বের হলেন। আর ফিরলেন না।
সেদিন চোখের তলদেশ বোধহয় প্রশান্তকেও ছাড়িয়ে গেলো।

এখন সবই পাল্টেছে।
বাবার একখানা চশমা মাঝেমধ্যে পরি।
তাও বাবার মতোন করে দেখতে পাইনা
যে চোখ ছিলো জলের তলদেশ ;
তাতে এখন খাঁ খাঁ মরুভূমি — বৃষ্টি এলেও জল নামেনা।
মায়ের সাথে কদাচিৎ দেখা হয়। উনি আসেন স্বপ্নে।
ধীরস্থির
একরাশ হাসি নিয়ে জীবন্ত থাকেন।
আমি কথা কইতে পারিনা ৷
হাত নেড়ে বিদায় নেন।
চোখে জল যুঝতে যুঝতে আমি মরে যাই।
স্বপ্নে কোন কবর খোঁড়া হয়না।

guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments