আপনার সাথে আপনার স্ত্রীর সম্পর্কটা নিয়ে কৌতুহল
আপনার প্রতিবেশীদের এক-একজন শার্লক হোমস করে তোলে।
তা আপনার স্ত্রীর সাথে’তো আপনার ঝগড়া হতো, তাইনা?যদিও এটা আপনাদের পারিবারিক বিষয়-
আপনার স্ত্রীর সাথে আপনার সময়টা কেমন যাচ্ছিলো?
আপনার স্ত্রী কি সুখি ছিলেন?
আপনার স্ত্রী কি…….
থাক থাক কিছু বলতে হবেনা- এটা আপনাদের একান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার।
আপনাদের সন্তান কি সুখি ছিলো,
তাদের বাবা-মায়ের ক্রমবর্ধমান চাহিদাসূত্রের
ক্রমহ্রাসমান ভালোবাসার দাম্পত্যে?
থাক বসুন বসুন আরও আরও কথা বাকি, এখনই বলতে হবেনা ছাই!
আপনি ঘাম মুছুন, এই এসি ঘরেও দেখি ঘেমে উঠেছেন আপনি!
অবশ্য….তা আপনার স্ত্রী বেরিয়ে ফিরেছিলো সন্ধ্যায়,
আপনি যখন বেরিয়েছেন ঝগড়ার পর তখন রাত নয়,
আপনার হাতে রক্ত দেখেছে আপনার প্রতিবেশি সুলতা,
আপনার হাতে থাকা বাক্সে কি ছিলো?
বই, কবিতার খাতা, গানের সিডি, ল্যাপটপ আরো আনুষঙ্গিক অনেককিছু তাইতো।
নতুন কিছু বলুন, মশাই-
নতুন কিছু বলুন, পুরানো কথা বাদ দিয়ে নতুন কিছু বলুন।
এভাবেই শুরু হয় আমার প্রতিটা দিন জেরায় – সন্দেহে।
আমার স্ত্রী হত্যার পর- (সবাই তাই বলছে।)
এভাবেই কাটছে আমার সময় শান্তি আর আয়াতকে নিয়ে
রোজ সকালে স্কুলে যাই- ওদের স্যারেরা/ ম্যাডামেরা তাকিয়ে থাকে।
ওখান থেকে বাজার- বাজার থেকে অফিস।
আমি ক্লান্ত হই উতসুক মানুষের জঘন্য দৃষ্টি
যেনো চাল গুদামে দৌড়াদৌড়ি করা ইঁদুরগুলোর মতন
লেপ্টে থাকে পিঠেতে আমার।
আমার স্ত্রীর হত্যাকান্ডের পর, যদিও লাশ খুঁজে পাওয়া যায়নি কোথাও?
একটা আগুনে পোড়া পাচ ফিট তিনের রমণী উদ্ধারের পর
ফরেনসিক রিপোর্ট আসার আগেই
আমাকে খুনী বলে রায় দেয় পারিপার্শ্বিক সমাজ,
অথচ…..
অথচ আমি চাইলেই রহস্যভেদ করে বলতে পারিনা,
বলতে পারিনা একবার আমাকে তোমার,
তোমাকে আমার সম্মুখীন করা হউক।
বলতে পারিনা স্ত্রী হত্যার যে দায়
আপনারা একজন প্রেমিকের ললাটে লেপে দিচ্ছেন
তা বানোয়াট, ভিত্তিহীন।
বলতে পারিনা ভালোবাসার নিত্যতার সুত্রে-
ভালোবাসায় যখন যুগল ব্যতিরেক অন্যকেউ ঢুকে যায়
তখন ঠুনকো সব কিছু মিথ্যা তাসের দেয়ালের মতন ভেঙে পরে।
বলতে পারিনা ও আছে, ও বেঁচে আছে।
দিব্যি ভালো আছে, হাসছে খেলছে উড়ছে ঘাসফড়িঙ হয়ে
প্রজাপতির ডানায় উড়ে উড়ে যাচ্ছে সকল সম্পর্কের রেণু ছুঁয়ে।
বলতে পারিনা ও গ্যাছে – ও গ্যাছে যেখানে ভালোবাসা বেশী আছে।
আমার হৃদয়, চারটে অবুঝ সবুজ পাতার হাত তিন-তিনটে হৃদয়,
বুকে চিনচিন ব্যথা কিছুই, কিছুই ধরে রাখতে পারেনি, হায়!
ও গ্যাছে এখানে ভালোবাসার চাহিদাসুত্রে যোগান কমে
ও গ্যাছে যেখানে দুচোখ একটা বন্ধ দরোজায়
প্রতিদিন অফিস আসার আগে বাজারের উটকো অহেতুক ব্যাগে
অন্যরাস্তায় হাটতে হাটতে তাকিয়ে তাকিয়ে যায়-
যদি সেদিনের মতন আবার দ্যাখা হয়ে যায় আমাদের!
আমি বলতে পারিনা,
তাই প্রতিদিন সকাল দশটায় থানায় বড়বাবুর সামনে বসে থাকি।
স্ত্রী হত্যার পর এভাবেই বুঝি কাটে স্বামী সন্তানের সময়,
এভাবেই হয়ত রুদ্ধশ্বাস প্রতীক্ষা প্রতিবেশিনীদের — স্ত্রী হত্যার পর!