বেড়ালটাকে কোনায় ফেলে রেখে চলে যাওয়া পথে বিস্মৃতির ধুলো দ্যাখি।
যেখানে পড়ে থাকে বুকবইয়ের পাতায় সতেরোটা বছর।
সতেরোটা বছর, ভাবতে পারছো?
একটা শিশুর বেড়ে উঠতে উঠতে তারুণ্যের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাওয়া,
সতেরোটা বছর অনেক শিশুকণ্যার গ্রামদেশে সংসারযাত্রা।
সতেরোটা বছর একনিমিষে আমি দ্যাখি আমি শুন্য থালায়
ব্যথাতুর হৃদয়ে পোষ্টম্যানহীন পোষ্টমর্টেমে এখনও
দাঁড়িয়ে মৌচাক মোড়,
রিকশায় যেতে যেতে ব্যবসায় প্রশাসনের গাণিতিক সমস্যা সমাধান করছি।।
সতেরোটা বছর আঙুল গলে বেরিয়ে গেলো,
মাঝেমাঝে রক্তাক্ত হাত,
মাঝেমাঝে শুভ্র ব্যান্ডেজ,
মাঝেমাঝে অসুখের গহীন অসুখ,
মাঝেমাঝে দমবন্ধ মৃত্যুভাণ।
পেছনে তাকিয়ে স্তব্ধীভূত হেরেমে সত্তর মহোতরমার সরোদের সুর শুনি।
মাঝেমাঝে অকালবার্ধক্য নিয়ে বুকের ভেতর ক্রমশ বড় হওয়া
জারুল গাছটাকে ছুঁয়ে দ্যাখি।
মাঝেমাঝে আমাকে আমার কাছ থেকে ছুটি দিয়ে কিনে নেই
একান্ত ব্যক্তিগত ক্লাউনের জীবন।
যেখানে ট্রাপিজের উঁচু থেকে লাফিয়ে পড়তে গিয়ে হাত ফস্কে যায়,
দর্শক “আরেহহ” শব্দে চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়াতে দাঁড়াতে
নব্বই ফুট থেকে সত্তর, সত্তর থেকে ষাট নামতে নামতে
আমি পঞ্চান্নতে রেলিং ধরতে গিয়ে আবার পিছলে নামতে থাকি।
দর্শক দাঁড়ায়
আমি নামি,
পঞ্চাশ- পয়তাল্লিশ- চল্লিশ।
দর্শক উপরে তাকিয়ে অবাক মুখ।
পঁয়ত্রিশ – ত্রিশ।
দর্শকের মুখ হাঁ।
পঁচিশ – বিশ, ক্ল্যাপস ক্ল্যাপস ক্ল্যাপস।
আমি দারুণ সুচতুর লিফটম্যান।।
এভাবেই সতেরো বছর। কান্নায় মেতে ওঠা ক্রন্দনবাড়ি।
আমার আন- আর্মড মরে যাওয়া ভীড়ে একদিন সুলতা আকাশের গায়ে
হাতে পায়ে লিখতে থাকে অথচ সুলতা আমার সতেরো বছরের কেউ নয়-
কবির কোন বেহেস্ত হয় না,
ধর্মপথ হয় না,
অলিন্দ দিয়ে কবি আসে আর নানায় দফায়
জলবায়ু পেরিয়ে আমাদের নিয়ে চলে তার অশ্রুত নির্যাসে।
কবি একটি ঘটনা;ঠিক যেমন বৃষ্টি পড়া রোদ ওঠার মত।
তার সাথে আড়ি হয়না।
সমস্ত কাদায় গাল রেখে শুয়ে থাকে সোয়েব মাহমুদ,
কান্নার হাটে সঙ্কুচিত ডোম যে তিনি,
শেষ মালাকার; তিনি ফেরার দরজা খুললেও
তাঁর কাছে পাওনা রয়েই যায় কবিরঙের অনিবার্য একটা থাকা … না থাকা।”