এই সেই মহা রিপু দেয়াল ঘড়ি,
যার প্রতিটি কম্পিত রিক্ত কাটায়
আমার হৃদয়ে মৃত্যু কম্পন ধ্বনিত হয়,
প্রতিটি অতিক্রান্ত সেকেন্ড-
প্রতিটি শ্বাস রুদ্ধকর মুহূর্ত:
যা আমাকে মৃত্যু গহবরে
মৃত্যু যন্ত্রনায় ত্বারিত করছে;
কেননা আমি প্রতি ক্ষণে পলকহীন নেত্রে থাকিয়ে ছিলাম
কোনো এক বিশেষ অতিথির অবয়ব প্রত্যক্ষের
সীমাহীন তৃষ্ণা ভরা হৃদয়ে
এই নীরব জনসারাহীন প্রান্তরে
তার পদধ্বনি শোনার প্রতিক্ষায়;
কর্ণকুহর পেতে।
অতৃপ্ত বাঞ্ছনা পূর্ণ চিত্তে অসীম সাহস নিয়ে
উত্তরী ঢাকা কাকের চোখের মতো কালো রাত্রিতে
ভুলে গিয়ে এযে মোর জীবনের এক
অফুরন্ত যন্ত্রণা পূর্ণ শর্বরী
যা কখনো ফুরাবার নয়,এ আশা কখনো পূর্ণ হবার নয়,
দৃঢ় মনোবলের সহিত তবুও আশার আলো ভরা চোখে,
স্বপ্নভরা ভবিষ্যতের কল্পনাপূর্ণ ঝিকিমিকি আলোক বর্তিকার প্রতীক্ষায় ছিলাম
একটাই মনোবল হেতু;
কথা দিয়েছিল সে “আমি আসতে পারি দ্বিতীয় কিংবা
রাত্রির শেষ প্রহরে; যে কোনো মুহূর্তে,
তাই এ শর্বরীতে একাকীত্বতার সহিত নির্ঘুম রাত্রি জাগা।
ক্ষণে ক্ষণে আশা ক্ষীণ হয়ে ওঠে,শিশির বিন্দুতে আলোক প্রতিবিম্বের মতো চোখে ঝাপসা লাগে,
মন দুর্বল হয়ে ওঠে;শঙ্কায় বুকে আন্দোলন সৃষ্টি হয়,
শ্রান্তি শ্রান্তিতর হয়ে সমস্ত কায়াজুড়ে অবস্বাদ অনুভূত হয়;
প্রতীক্ষার প্রহর অফুরান—
কিন্তু ঘড়ির কাটা অহর্নিশ ঘুরতে থাকে
রুদ্ধকরা শ্বাসের সাথে তাল মিলিয়ে,
শুধু তৃষ্ণাভরা চোখে হেরি দশদিক
আর প্রত্যয়ের সাথে দৃঢ় মনোবলে অপেক্ষয় থাকি
দর্শনের মহা কৌতুহলে;
এই বুঝি! এই বুঝি সে এলো!
এমনি করে কেটে গেল আমার জীবনের অপেক্ষাময় কালো রাত।
তবু পাওয়া হলনা একটি মুহূর্তের জন্যে তারে:ক্ষণিকের তরে।
কেননা সে আসেনি ঐ যন্ত্রণাপূর্ণ রাতে
একটি বারের জন্যেও,
সে ছিল তার ঘুমের রাজ্যে নিভৃত সুখ স্বপ্নে নিদ্রায়।
আর একটি বারও খোঁজ নেয়নি যে
কিভাবে কেটেছিল প্রতিক্ষাপূর্ণ রাত্রি আমার।
আজও অতৃপ্ত হৃদয় বলে–
আসা হলোনা তার– বাসা হলোনা তারে ভালো
হাসা হলোনা চোখে চোখ রেখে একটি বার
যাকে আমি চেয়েছিলাম আমার সমস্ত জীবনের ‘পরে।
আজ তাই সম্মুখে দণ্ডায়মান একটি ঘড়ির কাটার ধ্বনিতে সেই রাত্রি জাগা, হৃদয় আন্দোলিত করা ঘড়ির কথা মনে পরে গেল,
আর তাই দু’দণ্ডের করে এই স্মৃতির মাঝে
নিস্তব্ধ দাঁড়িয়ে আছি বেদনার্ত মনে, প্রতিচ্ছবি ভেসে উঠছে বার বার-
এযে ছিল মোর জীবনে; ঘড়ির কাটার সাথে
প্রতিযোগিতায় মহা হার।
2023-12-15