ক)
তুমি ঘুমিয়ে গেলে বৃন্দাবনের সব জোনাকির লেজ পুড়ে যায়। বাকলের কোষে চেয়ে থাকে তবু ইষৎ আলো— পেঁচার অগ্রহায়ণ চোখ
নিদারুণ হ-কার উল্লাস উঠে আসছে চাদর ভেঙে
মেঝেতে নিভে আছে নেরেইডের জিভ। অথচ কেমন ভ্যাপসা গ্রীষ্ম গ্রীষ্ম ভাপ— অরিন, তোমার উগরানো নিঃশ্বাস…
হে প্রাণদায়ী সময়, আমার আয়ুতে আরও কিছু আঁকিবুঁকি গুণ করে দাও! সতীদের ঘরে মন্ত্রীপরিষদও হয়ে ওঠে দক্ষ আর্টিস্ট।
খ)
বিকেল জুড়িয়ে এলে
আমার ঠোঁটেও বেজে ওঠে জিভ ভাঙা প্রেম
কোয়ান্টাম তত্ত্বে প্রতিটা নারীরই যেমন ফোটন আছে— ইদানিং তোমাকেও মনে হয় মা মরা কুকুর শাবকের দুধ মা, যার সাথে লেনদেন হলেও আমোদ নেই।
*
দেখো— পেয়ালার ডুমুরগুলো শুষে নিচ্ছে আতরদান।
শালুকের লিকলিকে ঘোরপ্যাঁচে দেহের ওম ছড়িয়ে পড়ছে ঘরময়।
অথচ আমার মেরুদণ্ডের অস্থিমজ্জায় স্যাঁতসেঁতে কাঁকড়া বিচ
*
সপ্তাহখানেক আগে, দৈনিকে তোমার ছবি বেরিয়েছিল অরিন,
কে বা কারা তোমার পার্সের চোরাপকেট লোপাট করেছে দেখে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছিলে।
আমোদগুলো কি তবে ব্যাংকে না রেখে পার্সেই রাখতে?
নাকি আমার সর্বস্ব লুটের তালে লকার ভেঙে তুলে আনছিলে ডুমুর-গাছ-ভর্তি গন্ধম!
গ)
গম এবং ফার্ন বনের ওপার
আশ্চর্য দাঁড়িয়ে আছো বাঙ্ময়ী মা-গাছ
মেরাথনে পা তুলে দিয়ে কলমের ডগায় প্রসব করছি গৃহের মৈথুন কিংবা ঘোড়াদের ব্রিজ
আমি দৌড়াচ্ছি— কোভিড কোভিড শ্লেষা গিলে খাচ্ছে সূর্যের হাতা
আমি দৌড়াচ্ছি— পিছিয়ে যাচ্ছে বনদ্বয়ের অক্ষ
আমি দৌড়াচ্ছি— দু’টো ঘোড়া আমাকে ওটি দিয়ে চিবোতে শুরু করেছে তোমার নখ
আমি দৌড়াচ্ছি— সমবেগে পিছিয়ে যাচ্ছে তোমার গর্ভস্থ ভ্রুণের মা মা ডাক
আমি দৌড়াচ্ছি— পেছাতে পেছাতে শেকড় পিছলে ধসে গেলে কালপুরুষ খাদে…
এবার আমার ভুম ভেঙে গেল।
খোঁয়াড় গলে ঘ্রাণ আসছে ঘোড়াদের তৃপ্তির ঢেঁকুর
ওহে অরিন…
তোমার ফোন কলে সকালের গান ভাঁজছে সেলুলার
ঘ)
পথ ও জঙ্গলের তপস্যা শেষে প্রেমিকাও কর্পুর;
যেমন করে উবে যায় ফেলে আসা ঘাসের চিহ্ন…
যেহেতু দুই পা অলা যানের কোনো ব্যকগিয়ার নেই, আমিও বারংবার ঘুমিয়ে পড়ছি তোমার অগ্রগামী বয়সের ঘাড়ে
আমিও হাঁটছি
যে পথ ধরে তীর্থে গিয়েছে আদিম দেবতাদের ম ম সেন্ট!
যে পথের পিচ গলে উঠে আসছে সেদ্ধ দুধের ঘ্রাণ কিংবা মদের বাষ্প…
যে পথের মাথায় সবুজ শাড়িতে দাঁড়িয়ে আছো ‘অরিন’ অর্থ পাইন গাছ!
*
একদা তোমাকে খুব নিখুঁত ভবতাম, অরিন
পরে শুনি চশমাও নাকি একটা রোগ!
এবং এটা সত্য- কারণ
আমার জুতোর সেমি ভাওয়েলের ধ্বনি তুমি টের পাচ্ছো না!
ঙ)
অরিন, তুমি কি স্রেফ পিনিয়াল বিভ্রম?
এইতো, তোমার হাতঘড়ি অতিক্রম করছে পঞ্চ ব্যাঞ্জন। বীজ এবং শস্যের পাঠ চুকিয়ে প্রগাঢ় হচ্ছে দর্শনের গান। পর্যাপ্ত আঙুর আঙুর সম্ভোগ শেষে হু হু করে তাপ বাড়ছে জানালার
সময় হয়েছে— এবার অন্তর্বাস চিড়ে ছিটকে যেতে হবে সিলিকনগুলো। রোদ এবং ধুলোর নিচে। ভুগোল বইয়ের ভেতর বাস করেও অদৃশ্য অক্ষরমতো।
ইনসমনিয়ার দ্বায়িত্ব ফুরালে বালিশের অ্যাপ্রন নিয়ে উড়ে যায় মৌ
অরিন, তুমি বরং জিইয়ে রাখো এই কাব্যজন্ম
আত্মহত্যার সিঁড়ি বেয়ে উঠতে উঠতে কবি তার রুহু ধুয়ে নেক হুরদের লালায়।
চ)
এয়ারবাড ছুঁলে
শ’খানেক কামড় সোল্লাসে উঠে আসে ভিওলার ই-মাইনরে
অথচ, বৃষ্টি এলে ওসব অর্কেস্ট্রাগুলো আমি বেমালুম ভুলে যাই!
বৃষ্টি— তোমার মতোই এক সৃষ্টি সে-ও
তোমার শত্রু
তোমার সম্পূরক,
দাই মায়ের মতো পুষ্টি যোগায় আমার নাবালক প্রেমে;
অজ্ঞতাবশত তুমিই যে বারবার চাষ করে ফেলো আকাশ!
ছ)
প্রেম, সে-তো ঈশ্বরীর মতোই অচল
কিন্তু অমর- যেন একটা পাথরকুচি গাছ
জ)
বৃষ্টি এলেই তোমার দাঁতগুলা এমন ইনসুলিন হয়ে ওঠে কেন, অরিন?
এদিকে আমি সোডার বোতলে শুয়ে থাকি, যেন একটা বেগুনি রঙের কর্ক!
ছ)
বিছানাটা লাইব্রেরি হয়ে গেল অরিন;
কয়েকটা সেফটিপিন খুলেতে খুলতে একজোড়া কৈ মাছ হয়ে যাচ্ছে আয়ু, অথবা জ্ঞান।
জ)
মানুষ মাত্রই নির্জীব- ধুলোবালির ক্রাফ্ট
যার কোনো ঘ্রাণ নেই
ঘ্রাণ মূলত ফসল ও পোশাক
তাইতো কালোজিরার ক্ষেত দিয়ে আমার এই পুবমুখী ভ্রমণ;
সাইনাসের প্রদাহ বেড়ে গেলেই যে তোমাকে মনে পড়ে অরিন!
অথচ আমাদের দেখা হয়েছে ভোরে, যখন কন্ডিশনারগুলো নিতান্তই পেঁয়াজ- কৌটায় বন্দি সম্ভোগ।
ঝ)
কমা ( , )
– মাছিদের স্তব কিংবা আমাদের নাতিদীর্ঘ আপোস।
দাঁড়ি ( । )
– পূর্ণচ্ছেদের শ্বাসেই শোষিত হয় পুনর্জন্মের আয়ু।