তন্দ্রাহীন রাত্রি,মস্তিষ্কে লোমহর্ষক সব দৃশ্যের উঁকিঝুঁকি;
জ্যান্ত দুধের শিশু নিয়ে কুকুরের টানাটানি;
অর্ধনগ্ন-বিবস্ত্র তরুণীদের প্রাণহীন দেহ সারি সারি-
এ যেন এক মৃত্যুপুরী।
রাত্রির সব নিস্তব্ধতা ভেদ করে সন্তান হারা মায়ের আর্তনাদ কানে বিঁধে সুচের মতো,
আত্মা শিউরে ওঠে শুনে ধর্ষিতার আত্মচিৎকার;
চারপাশে ছেয়ে আছে দস্যুর রাহাজানি
চোখ বুজলেই কানে বাজে অত্যাচারিতের হাহাকার।
মা হাত বাড়িয়ে ডাকে তার বুকে আমি নিশ্চুপ, আমার আমি আমায় জানায় ধিক্কার।
পারছিনা,পারছিনা,পারছিনা
আমি পারছি না মেনে নিতে।
আমায় ধুকে মারছে পরাধীনতার গ্লানি,
কেমনে ভুলি সেদিনের করুণ দৃশ্য ?
বিয়ের পিড়িতে নববধূর সম্ভ্রমহানি।
পাশেই বুটের তলায় পৃষ্ঠ তার স্বামীর নিথর দেহ।
আলতা রাঙা পা,মেহেদীর রঙে রাঙানো হাত,লাল বেনারশিতে নববধূর বেশে বিধবা;
সিঁথিতে সবে দেওয়া সিঁদু্রের লম্বা রেখাটার খানিকটা তখন কপালে লেপ্টে আছে, বাকীটুকু ধর্ষকের জিহ্বা,দাঁড়ি আর পাঞ্জাবিতে দৃশ্যমান।
বাম হাতের শাঁখাটা ভেঙ্গে গেথে যেতেই ফিনকি দিয়ে ওঠে রক্ত,
সেই রক্তের স্রোত বয়ে যায় মিলে যায় তার স্বামীর রক্তের সাথে।
আমার আমি করে বিদ্রুপ,তোলে প্রশ্ন
নিবীর্য,মেরুদন্ডহীন কাপুরুষ-
কত দেখবি?
মায়ের প্রতি বুনো জানোয়ারের লোলুপ দৃষ্টি-
আর কত দেখবি ?
না,ওদের রুখতে হবে।
মা ডাকছে আমায়,ওদের রুখতেই হবে।
আমি কবিতা লিখবো-
আমার কবিতা বিপ্লবীর হাতিয়ার,
আমার কবিতা সংগ্রামী জনতার সমন্বিত কণ্ঠস্বর,
সালাম,বরকতদের রক্তে লেখা এই কবিতা শক্তিতে অবিনশ্বর ।
মা হাত বাড়িয়ে ডাকছে আবার
যাবো মা, আমি যুদ্ধে যাবো ।
চোখ রাঙ্গিয়ে, মারবো বুক পেচিয়ে,
ঘাড় বাকিয়ে বলবো ওদের
বাংলার জমিনে আর ঠাই হবেনা তোদের
বাঁচতে চাইলে “যা,পালা”