গাছটির নাম বাংলাদেশ
_________________________________________
একটি শিউলি ফুলের গাছ লাগাবো
গাছ লাগানোর জন্য তো একটু মাটি দরকার।
মাটি তো আমাদের আছেই।মায়ের কাছে শুনেছি শিশু কালে এ মাটিতে কত গড়াগড়ি খেলেছি।কিশোর বয়সে এ মাটিতে কত খেলা খেলেছি।এ মাটি তো আমাদের।এ মাটিতে আমাদের বাবা-দাদারা কত কিছু চাষ করেছে।
কিন্তু আমি একটি গাছ লাগাবো বলে মাটি খুঁজে বেড়াচ্ছি। এ কথা শুনে মা ভ্রু কুঁচকে বললো-
বাপধন কি পাগলামি কইরে বেড়াচ্ছিস।এত মাটি আমাদের তুই মাটি খুঁজে পাচ্ছিস না হতচ্ছাড়া।
মা’কে কি করে বলি, মা আমি যখন গাছ লাগাতে গেলাম।ওরা বললো এ মাটি নাকি আমাদের না?
এ মাটি নাকি ঐ উর্দুদের।
মা আমাদের এই মাটি তো উর্দু বোঝে না।এ মাটি তো বাংলা বোঝে কেবল।তুমি তো এ মাটিতেই আমাকে মা বলা শিখিয়েছো।তবে ওরা কেমনে বলে- এ মাটি ওদের।
কথাটা মা’কে বলার আগেই বাবা শুনে ফেলেছিলো।
বাবাদের তো প্রচন্ড রাগ।বাবা সেই রাগেই এই মাটি আমাদের এই দাবি নিয়ে রাস্তায় বেড়িয়েছিলো।দীর্ঘ নয় মাস পর শুনেছি এই মাটি আমাদেরই। মাটি আমাদের হলো কিন্তু বাবা আর আমাদের হলো না।
হলো তাঁরাদের।
অবশেষে আমি শিউলি ফুল গাছটি লাগিয়েছিলাম।
গাছটির বয়স আজ ৫৪ বছর হতে চললো।গাছটিকে খুব যত্নে রেখেছিলাম। এখন আর পারছি না।গাছটি ভালো নেই মা!
গত সকালে গাছটিকে পানি দিতে গিয়ে দেখি।গাছটির সব ফুল লাল হয়ে গেছে। গাছটির সব ফুল লাল দেখে আমি গাছটির ফুল গুলোকে বললাম-
এই তোমরা কারা আমার এই গাছে? আমার গাছের সাদা শিউলি গুলো কোথায়? একটি ফুল উত্তর দিলো- আমি সাঈদ বলছি।আমি সেই সাদা শিউলি ফুল।শাসকের বু!লেটে আমি সহ সব ফুল আজ রক্তাক্ত লাল শিউলি।অপু তুই আমাকে চিনেছিস-
আমি আবু সাঈদ বলছি।
মা জানো এই গাছটির নাম কি?
এই গাছটির নাম “বাংলাদেশ”।
পুনশ্চঃ তবে কি আমাদের বাবা-দাদারা শুধু মাটিই স্বাধীন করেছিল? গাছটি নয়?
কবি শাহাদাত শিকদারের একটি ছবি দিলে ভালো হতো। কবিতাটি আমি আবৃত্তি করেছি, কিন্তু উনার ছবি পেলাম না।