আমার শঙ্কিত বুকের ভেতর
একটা অনাকাঙ্খিত দৃশ্যকল্প,
দু’চোখের রেটিনায় সোমালিয়ার হাড্ডিসার
নিরন্ন মানুষের মুখ।
দূর্বিনিত চোখে আমি দেখি
রাস্তায় পড়ে থাকা গলিত লাশের হিস্যা বন্টনে
কাক আর কুকুরের দ্বন্দ্ব
বাতাসে লাশের উৎকট গন্ধ ।
মহাসড়কের পাশে কর্তিত গাছের মতো
মুখ থুবড়ে পড়ে আছে সারি সারি কঙ্কাল,
রেল লাইনের পাশে শ্যাওলা ধরা ডোবায়
কচুরিপানার মতো ভেসে আছে
মানুষের হাঁড়গোর, পঁচা মাংশ
আর মুন্ডহীন কঙ্কাল
সাদা কঙ্কাল, ধূসর কঙ্কাল
প্রলাপহীন ব্যঙময় কঙ্কাল ।
উত্তর গোলার্ধ থেকে দক্ষিণ গোলার্ধ অবধি
শুধু কঙ্কাল আর কঙ্কাল ।
কোথাও মানুষের পদচারণা নেই, মুখরতা নেই
ল্যাম্পোস্টের নিয়ন আলোর নিচে
ছিন্নমূল মানুষের নিয়ত দৃশ্য নেই,
হা-ভাতা মানুষের নির্লিপ্ত চোখের চাহনি নেই ।
মার্সিডিজ বেঞ্চের লুকিং মিররে
বকুল ফুলের মালা হাতে পথশিশুর মলিন মুখ নেই
ট্রাফিকজ্যাম, চিৎকার চেঁচামেচি
ভিরভাট্টা কিচ্ছু নেই ।
পৃথিবীর ফুসফুস পোড়ানো এ্যামাজনে
বনদস্যুর তান্ডব নেই,
আদিবাসী তরুণীর স্তন চুষে খাওয়া কাঠবেড়ালি
ফিরে পেতে চলেছে অভয়ারণ্য ।
সেখানে বুঁনো মোষ আর সিংহের সঙ্গমে
জন্ম হতে চলেছে নতুন প্রাণিকুল,
যাদের আবাস ভূমি হবে
এক পৃথিবী, এক অরণ্য ।
গোরস্থানে শবদেহের সৎকার নেই
শ্বশ্বানে বাঁশ কাঠ পোড়ানোর অগ্নিশিখা নেই,
পৃথিবী জুড়ে কোটি কোটি লাশের
মুখনিঃসৃত লালা থেকে
শ্রেণিবৈষম্যের অবসান ঘটিয়ে
জন্ম নিতে চলেছে কোটি কোটি কঙ্কাল ।
একদিন বিচারিক কাঠগড়ায়
কঙ্কালের মুখোমুখি হবেন ঈশ্বর
অমিমাংশিত সংলাপে জন্ম নেবে
অচেনা এক নতুন পৃথিবী । #