2/5 - (1 vote)


উচ্চতর ডিগ্রিধারী ছেলেটা একটা চাকরীর জন্য যখন তার টিউশনির টাকায় কেনা চটিজুতা ক্ষয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ে-
তখন তার চোখেমুখের করুন ঝলসানিতে মায়ারূপধারী সন্ন্যাসী অহরহ শিক্ষা ব্যবস্থা আর মুখোশধারী রাষ্ট্রের নিকুচি করে।
তার দীর্ঘশ্বাস গিয়ে পড়ে ঈশ্বরের কাঁধে,
ঈশ্বর হাত জোড় করে ক্ষমা চায়।

জীবিকার্জনের তাগিদে যার চুলগুলো রুক্ষ হয়ে গেছে সেই ছেলেটারও চাঁদতুল্য প্রেমিকা আছে।
প্রেমিকাকে নৃতাত্ত্বিক চুমো দিয়ে সে বলেছে- এই বসন্তে তোমায় বাসন্তী শাড়ি দিবো,
কাজল দিবো, ফুল দিবো।
প্রাণ খুলে ঘুরে বেড়াবো… টিএসসি শাহবাগের শিরায় শিরায়।
বসন্ত তার আগমনধ্বনি বাজিয়ে দিয়েছে দিগ্বিদিক।
রাষ্ট্রের নির্লজ্জ চশমা মধ্যরাতে দামামা বাজিয়ে চাকরীর কোটা পূর্ণ করে।

সার্টিফিকেটের বয়স বাড়ে,
ঋতুর আবর্তনচক্রে নদীর জল শুকিয়ে যায়,
আমের মুকুল আসে, চিত্রা হরিণটা বাচ্চা দেয়,
গৃহস্থের লাঙ্গলের ফাল ক্ষয়ে যায়,
হরিদা দোকান ছেড়ে ডিলার হয়ে যায়,
পাশের কাকা মস্ত পাকাঘর করে ফেলে,
তেঁতুল পেকে গাছ থেকে ঝরে যায়,
প্রেমিকার অপেক্ষা থেকে অগ্নি ঝরে,
বাবার পুরাতন চশমাটাও নষ্ট হয়ে যায়,
গত দু’বছর ধরে বাবার চেয়ারটা ভাঙ্গা,
ছেলের চাকরী হলে একটা নতুন শাড়ি পাবে — এ আশায় মা’য়ের কাপড়ে ঊনিশটা গিঁট্টো,
ছোট্ট বোনটি আশায় থাকে তার দাদা এত্তোগুলো চকলেট, নতুন জামা আনবে।

কিন্তু এ রাষ্ট্র নিষ্ঠুর চৌকিদার দিয়ে মুহূর্তে মুহূর্তে ছিঁড়ে খাচ্ছে সার্টিফিকেট প্রাপ্ত সৌখিন যুবকটাকে।
একটা চাকরী, ঐ একটা চকরী পেলে জীবনটা কতোই না রঙ্গিন হতো !
কিন্তু নির্লিপ্ত রাষ্ট্র ভালোবাসার নামে কারো মুখে হাসি আনতে পারেনি, মাকড়শার জালের মতো মুখোশধারীরা ধুয়াশা অন্তর্বাস পড়ে আছে হৃদপিন্ডে, প্রতিটা শিরা-উপশিরায়,
এমনকি সেন্সরের নিউরন গুলোতেও।

যুবকের নাকের ডগার ঘাম গিয়ে পড়ে যমুনার কোলে, তার ওষ্ঠ থেকে নির্গত শব্দাবলী বায়ুমণ্ডলীয় স্থরে মিশে গিয়ে ঈশ্বরের কর্ণে আঘাত হানে।
ঈশ্বর নিরুপায় হয়ে করুণা ভিক্ষা করে, তান্ত্রিক সমাজপতিদের কাছে।

এতো কিছুর পরে নির্মল যুবকটা একটা চাকরী পায়, যোগ্যতার চেয়ে যৎসামান্য।
ফিরে এসে দেখে প্রেমিকা গর্ভবতী।
তখন সে রাষ্ট্রের মুখে থুথু ঝেড়ে আবার দায়িত্বগামী হয়।

guest
1 Comment
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments
পার্থ সরকার (জঞ্জাল)
2 years ago

এত সুন্দর! ✨💙
শুভ কামনা স্যার আপনার জন্য 🌻🥰
শিল্প শৈলী ধারায় বাস্তবতার রঙ
তুলে ধরেছেন প্রতি পঙক্তিতে ✨💙