অনেক পাখির মতো এখনো বাড়ি ফেরেনি কাদামাখা একজোড়া পা,
পুকুরঘাটের বাঁধানো সিঁড়ি বেয়ে নামতে থাকা শামুকও জানে না গন্তব্য,
তবু পৌরাণিক এক স্মৃতি নিয়ে একটা দুপুর ঠিকই ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে,
বুকের উপর শুকোতে দেয়া শাড়ির মতো দূর্ভেদ্য এক অস্পষ্টতায়!
পৃথিবী ক্রমশ ঘুরছে বলে যারা বাড়ি হারিয়েছে, রাত হলে তারা কোথায় ফেরে,
স্টেশনের মেঝে, বাতিল রেলের বগি, ভাঙ্গাচোরা ফুটপাতে বিছানো চাদর তুলে দেখেছি,
ওখানে কেবল জীবন আঁকড়ে ধরে শুয়ে থাকে কিছু অদ্ভুত আলোর মানুষ!
অথচ এক পা তুলে আরেক পা রাখতে না রাখতেই হারিয়ে যাচ্ছে সব,
সদর দরজায় লেখা নেমপ্লেট, স্কুলের খাতায় লেখা রোল নাম্বার, পরিচয়পত্রে লেখা ঠিকানা!
কবে কোন বিকেলে বাদাম ছিলতে গিয়ে এক কিশোরীর নখে ঢুকে গিয়েছিলো খোসা,
তারপর নখের ভেতর পুষে রাখা প্রেম একদিন আঙুল পচিয়ে দিয়ে-
সার্জনের ছুরির তলায় কাটা পড়েছিলো, যেভাবে মানুষের মাথা কাটা পড়ে রেলের স্লিপারে!
পৃথিবীটা বোধহয় সরে গিয়ে গিয়েছিলো অথবা সিলিং থেকে ঝুলিয়ে দেয়া দড়ির-
মাথায় প্রাণহীন ঝুলে ছিলো, ময়নাদতন্তের ঘরে পৌঁছানোর আগে পর্যন্ত,
আমাকে যদি জিজ্ঞেস করো, আমি কার নাম জানি, আমি কিছুতেই বলবোনা,
যে কিশোরী আঙুল হারানোর পরেও দুপুরবেলায় কলঘরে শাড়ি ভেজাতে জানে,
তাকে বরং জিজ্ঞেস করে দেখো, যদি তার কিছু মনে পড়ে!
নইলে অনেক পালক হারানো পাখির মতো দাঁড়িয়ে থাকবে একজোড়া কাদামাখা পা,
বাড়ির ঠিক পাশ দিয়ে চোখ ঘুরিয়ে নেবে, তবু কোনো কিছুই নিজের বলে স্বীকার করবেনা,
মৃতদের কোনো বাড়ি থাকতে নেই, কেবল অভিমানটুকু বুকে চেপে তারা দাঁড়িয়ে থাকে,
বাড়ি থেকে একটু দূরে, যতদূরে দাঁড়ালে তাকে আর চেনা যায় না!