বাংলা কবিতা, আত্মচ্যুত কবিতা, কবি রাহী তূর্য্য - কবিতা অঞ্চল
Review This Poem

মানুষ হওয়ার ধান্ধায় ব্যস্ত থাকতে থাকতে ক্লান্ত হয়ে যাই, অসুস্থ হয়ে যাই আদি ভূমির সন্ধানে ছাইয়ের জলে সাঁতার কাঁটতে থাকা জীর্ণ, অনুভূতিহীন রাজহাঁসের মতো।

কাপে চা ঢালার শব্দে কান্না আসে
রাস্তার ট্রাফিকের শব্দকে হাহাকার পিতা দাবী করে।
হাসতে থাকা পাথর হয়ে যাচ্ছে সব–থামছে না।
ব্যবসা,বাগান, দর্শন,  নাগরিক আলাপ, মায়া, জ্ঞানীদের জ্ঞান চোদানো, শুনতে না চাওয়া–সহ্য হয় না।

আমার ছায়া আমাকে দেখে আঁতকে ওঠে
পায়ের ছাপ অসুস্থ করে তোলে আমাকে
আমার সত্ত্বা নিংড়ে ফেলে আমাকে–অবসাদগ্রস্ত।

যদিও ফ্যাসিবাদের উচ্ছিষ্টভোজীদের ফুল দিয়ে  ভয় লাগাতে ভালো লাগে,ভালো লাগে গর্ভবতী মায়ের সাথে মৃত্যু নিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা আলাপ করতে।  তবুও উদভ্রান্তের মতো ছুরি হাতে রাস্তায় দৌড়াদৌড়ি করা, কিংবা গলা ছিঁড়ে চিৎকার করে মরা — সেটাই ভালো হবে।

আঁধারের শেকড় বাড়তে দিতে চাইনা।
চাইনা দ্বিধাজীবি দুর্ভাগা পৃথিবীর ভেজা অভ্যন্তরের কেঁচোর মতো সুড়ঙ্গ খুঁড়তে।

না চাইলেও গাঢ় দুঃখ আসে হতাশার ছদ্মবেশে
শেকড় গাঁড়তে থাকে নীরবতার লাশে ভর্তি গোরস্থানের নামফলকহীন সমাধির ওপর।

  আর হয়তো এজন্য প্রতিটি শনিবার বারুদের মতো পোড়ে, সে আসে প্রবল বন্দিদশার চেহারা নিয়ে, ক্ষতবিক্ষত ক্যালেন্ডারের মতো পিনপতন নীরবতার মতো বিকট আর্তনাদ করতে করতে, গরম রক্তে পূর্ণ সন্ধ্যার চেহারা নিয়ে।

    এবং কোণায় ছুঁড়ে মারে আমাকে। কখনো স্যাঁতস্যাঁতে ঘরের কোণায়,কখনো হাঁড় ঝুলতে থাকা হাসপাতালের কোণায় আবার কখনো জীবন নামক পরাজিত ব্যাধির ভয়ঙ্কর গোলক-ধাঁধাঁয়।

আবার কখনো তিনচোখা কাক বসে থাকে কার্নিশে,দরজা থেকে ঝুলতে থাকে পঁচা নাড়িভুঁড়ি, নকল অনেক কিছু ভুলে পড়ে থাকে কফি পটে, আয়না কাঁদতে থাকে প্রচন্ড ভয়ে।

আমি হাঁটতে থাকি–শান্তনা, ঘোলাটে চোখ, ডাঁট ভাঙ্গা চশমা, উন্মত্ততা, ক্রোধ, বিস্মৃতির কাঁধে হাত রেখে। অফিস,ট্রাফিক, ফুটপাতের দোকান,মনকাড়া তরুণী, তামাকের গন্ধ ভেসে আসতে থাকা কসাইর দোকান ও রাস্তার পাশে নোংরা চোখের পানি ফেলতে থাকা রোমান্টিক ছবির পোস্টার — সব উপেক্ষা করে।

 

guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments