4/5 - (1 vote)

হয়তো সূর্যের দোষে আমাদের রক্ত আর ততখানি অগ্নিবর্ণ নয়।
নিমের পাতার মতো নুয়ে গেছে হাত আর হাড়
কবে কবে কমণ্ডলু ভরে গেছে কার্তিকের হিমে, হাহাকারে।
যে-সব পাখিরা আগে মারা গেছে আকাশের আলোর উঠোনে ধান খুঁটে
সেই সব পাখিদের পালকের শতচ্ছিন্ন আঁশ
সেই সব পাখিদের দুবেলার কথাবার্তা, দুঃখ, দীর্ঘশ্বাস
বাতাসের ভিড় ঠেলে এখন ক্রমশ এসে আমাদেরই কাছে ঠাঁই চায়।

সবই কি সূর্যের দোষে? সময়েরও বহু দোষ ছিল।
সময়ের এক চোখে ছানি ছিল অবিবেচনার
জিরাফের গলা নিয়ে সে শুধু দেখেছে দীর্ঘ অট্টালিকা, কুতুবমিনার
দেখেছে জাহাজ শুধু, জাহাজের মাস্থলের কারা কারা মেসো পিসে খুড়ো
দেখেনি ধুলো বা বালি, ভাঙা টালি, কাঁথা-কানি, খড়, খুদ-কুঁড়ো
দেখেনি খালের পাড়ে, ঝোপে-ঝাড়ে, ছেঁড়া মাদুরিতে
আরও কি কি রয়ে গেছে, আরো কারা ঊর্ধ্বমুখী সূর্যমুখী হতে চেয়েছিল
কালবৈশাখীর ক্রদ্ধ বিরুদ্ধতা ঠেলে।

সময়েরই দোষে
আমাদের বজ্র থেকে সমস্ত আগুন খসে গেল
যে রকম বাগানের ইচ্ছে ছিল পাথরের, কাঁকরের বর্বরতা ভেঙে
যে রকম সাঁতারের ইচেছ ছিল জলে স্থলে সপ্তর্ষিমণ্ডলে
ক্রমে ক্রমে সূর্য ম্লান
ক্রমে ক্রমে সময়ের সমস্ত খিলান
পোকার জটিল গর্তে, ঘুণে, ঘুনে জীর্ণ হল বলে
সোজা ঘাড়ে শাল ফেলে সে রকম হাঁটা চলা বাকী হয়ে গেল।

আবার এমনও হতে পারে
আমাদের কাছ থেকে প্রত্যাশিত আলিঙ্গন, অঙ্গীকার, উষ্ণতার তাপ
কিছুই পায়নি বলে সূর্য ও সময়
প্রতিদিন নিজেদের সমুজ্জল প্রতিভাকে ক্ষয় করে করে,
বেদগানে যে রকম শোনা গিয়েছিল, তত অগ্নিবর্ণ নয়।

guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments