আমার দু-চোখের সামনে দিয়ে
কিছু দল বাঁধা মেঘ উড়ে যায়,
আমি আঙুল দিয়ে ছোঁব বলে হাত বাড়াই,
তাঁদের ছুঁতে পারলে,
আমিও কি পাব মেঘের জীবন?
আমি মেঘ হলে প্রবল অন্ধকার মেঘ হবো।
হবো ঝড়; আজকের রাতের মতো।
আমরা তো বহু দূরে- তারও দূরে,
দুটো নক্ষত্রের মতো সকল নিয়ম ভেঙে,
মিলে যেতে চাইছি আজ; মেঘদের মতন আলিঙ্গন,
মেঘদের মতন আলিঙ্গনে, কোনো এক গোপন অসীম সত্যের বশে,
মিশে যেতে চাইছি আজ;
তবুও বৃষ্টির ফোঁটায় যেন, তার চোখের বিন্দুজল দেখতে পাই,
বৃষ্টির জল আমায় ছুঁয়ে ফেলো আজ,
আমার সমগ্র শরীর ছুঁয়ে দাও,
যে বাসনার ঢেউ বয়ে নিয়ে এসেছ আজ রাতে,
নির্জন দ্বীপের মতো আমি একা; বৃষ্টির ছোঁয়ায়,
বহু দূরে তার ছোঁয়া মনে আসে।
আমার মতো, তারও কি মনে পড়ে আজ রাতে?
প্রবল কামনার ঢেউ তারও মনে জাগে?
আজকে প্রবল বৃষ্টির রাতে,
সেও কি হতে চায় মেঘ?
বহুদিন, বহুবৃষ্টি কেটে গেছে,
একমুহূর্ত আলিঙ্গনের জন্য; আমার চোখে আজ বিন্দুজল,
মেঘ সে কি মানুষ হতে চেয়েছিল কখনো?
মানুষের মতন চেয়েছিল দেখতে? পৃথিবীর বিভ্রান্তিকর জনসমাজ!
মেঘ তো তবুও স্বাধীন; মানুষ তবুও নয়।
এমন বৃষ্টির রাতে, গিয়েছিলাম কোনো একদিন
কোনো এক নির্জন মাঠে,
কোনো মানুষ নেই, তবুও প্রাণের ছড়াছড়ি,
অন্ধকারের মাঝে সোনালি আলোর মতো জোনাকি,
সেসকল জোনাকিরা স্বাধীন; তারা কেউ মেঘ হতে চায় না,
তাদের পিছু পিছু সোনালি আলো, তারা কেউ নিঃসঙ্গতা চেনে না।
নিঃসঙ্গতাকে বারবার পেয়েছি আমি; জোনাকির মাঝে নয়,
বহু মানুষের ভীড়ে, বারবার- বহুবার, এমন বৃষ্টির রাতে।
এভাবেই কোনো একদিন,
এমন বৃষ্টির রাতে হয়তো
সব ছেড়ে ছুটে ছুটে অন্ধকার মেঘের পিছু,
মানুষ জন্মের সব ক্ষোভ ভুলে গিয়ে; জীবনের শেষে এসে কিছু,
অপ্রাপ্তি আর বিষাদ গাঢ় নীল মেঘের মতো,
ছেড়ে রেখে ছুটে যাব,
যেভাবে আজ রাতে আছড়ে পড়ে ভেঙে যায় বৃষ্টির ফোঁটা,
সেভাবেই এখানকার কিছু নিয়মকানুন ভেঙে,
মেঘদের মতন আলিঙ্গনের কামনায় ছুটে যাব।
এমন বৃষ্টির রাতে,
মেঘদের মতন আলিঙ্গন সেও কি চায়?