কোন কারণে? কেন এমন হয়? কিভাবে?
অবিশ্বাস্য হলেও হন্তারক রাবণ
একদিন অস্পৃশ্য শিশুর মত কাঁদে…
ধীরে যেন যৌবন না-এর নায়ে ওঠে
রাম হয়ে যায় ভিখারি রাঘব,
বিদ্রোহী কবিকে দ্বিধাবিভক্ত গাইতে হয়
“ফুল নেব না অশ্রু নেব” –
খিড়কি থেকে সিংহদুয়ার
তার আরও বাইরের পৃথিবীর
নগ্ন রক্তরঙিন ক্লেদাক্ত পথে প্রান্তরে
বৈপরীত্যের এই বিষম ভেদ ভাবনা
প্রতিপক্ষের কাছে অযাচিত আত্মসমর্পন
মানব জীবনের চিরকালীন ট্র্যাজেডির বেহাগ করুণ…
মানুষ যা বিশ্বাস করেনা, যে পথে চলে না
সেই মত আর সেই পথই
আবির্ভূত হয় মানুষের শ্রেষ্ঠ জীবনানুষঙ্গ হয়ে…
মানুষ যা ভালোবাসে, বস্তুজৈবিক জীবন পর্যায়ে
তাই হয়তো মনে আক্ষেপ ও ঘৃণার উদ্রেক করে
যা সে অসম্ভব অবাস্তবিক অননুমেয় ভেবেছিল
তাই একদিন সে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে…
যে শৈল্পিক দর্শনে মননে একদিন
অপ্রতিরোধ্য অন্তরে সৃষ্টি করে প্রস্তরিত বুকে প্রাণ
সেই হয়ে ওঠে মাতাল বিধ্বংসী…
ফুলের সাথে সখ্য হতে গিয়ে
সে হয়ে যায় বিষকুম্ভ ভ্রমর
সারা জীবন সম্প্রীতির নীতিবাক্য আউড়িয়ে
সে হয়ে যায় সনির্বন্ধ স্বৈরাচারী…
হয়তো একটা মাত্র বিশিষ্ট অহং প্রগলভায়
সর্বোচ্চস্থানীয় পূণ্যবান হয়ে যায়
অতলান্তিক নরকের চির প্রজ্বলিত পুনঃদগ্ধ পাপী…
মানুষের মন মানসের জটাজাল দেখে শুনে
মানুষই সবচেয়ে বিস্মিত সন্দিগ্ধ বেশি
এত এত রক্তাক্ত কবিতার পাতা, নাটকের অঙ্ক
উপন্যাসের চতুর্মাত্রিক চরিত্রের চালচিত্র
এত শত চলচ্চিত্রের প্রক্ষেপিত ছায়া শব্দ
আর ইথারে ভাসমান তড়িৎচুম্বকীয় তথ্য
সবাই সবই সমস্তই মেঘের উপর মেঘ
এই শর্মিলী সফেদ তো এই ধুসর বিষন্ন
কেবলই সময়ান্তরে বাড়ানো উদ্বেগ…
বিপ্লব প্রতিবিপ্লব যুদ্ধ গৃহযুদ্ধ শোষন অনাহার
এনেছে মৃত্যু শিল্পীত নিপীড়িত দেয়াল চিত্র
ধুমায়িত চায়ের কাপে সভ্য জগতের আদিম রক্ত
চুমুক অপেক্ষায় শিরঃপীড়া আক্রান্ত নিরর্থক প্রেতাত্মা
লাল কালিতে সাক্ষরিত জীবন দন্ডের রায়
একটি কুসুমিত ইস্পাত হৃদয় শুধু
নিঃশব্দ নৈর্ব্যক্তিক চাহনিতে অন্তিম কলম চালায়
মৃত্যুকে তুচ্ছ জ্ঞান ক’রে
বিচূর্ণিত আয়নায় ভূবনবিদারী হাহাকার করে
বিষম কোণে প্রতিবিম্বিত স্বঘোষিত দন্ডিত অবয়ব…
________________________________________________
“আমার নিজের বলে কিছু নেই
কখনও ছিল কি?
বলো কার থাকে?
আর কেন মিথ্যা, প্রভূ?
আর কেন মুখোশ, প্রভূ?…
এই বাঁচা কি দরকারি খুব?
এই মরা কি খুব জরুরী
এই বাঁচা কি হাই-এর তুড়ির শামিল
নাকি ধাপ্পা, জলজ জোচ্চুরি?…
পৃথিবী কি কোনদিন বাসযোগ্য ছিল?”
⌠কাব্যগ্রন্থঃ ‘বিকল্প বাতাস’ / কবিরুল ইসলাম⌡