উপবৃত্তাকার সড়ক নদীতে, ক্রমশ নঞর্থক সামনে চলা
অসীম সংখ্যক নাভী পরিবর্তন,
গাছ তলা ছেড়ে পাঁচ তলার স্বপ্ন-বিলাস;
কোষ বিবশ ব্যথায় অস্ট্রেলিয়ান বিয়ার গলাধঃকরণ,
পোষাকের মতন নারী বদল…
…এসব হয় না আর;
মাঝে দূরত্ব ২৭৪ কিলোমিটার…
রাতের একান্ত স্বাধীন সময়ে আইবানেজ হাতে,
কার্ট কোবেইনের অনিবার্য প্রভাবিত নোটেশ্যনের দ্যোতনা
ওমর খৈয়াম ও ঈয়াসমিঁ মিশ্রিত রুবাই বিশ্লেষন;
জীবন্ত সাঈদ আহমেদের সাথে বিশ্ব নাটকের স্মৃতি রোমন্থন,
সত্তরোর্ধ মাতামহের লাইট শেড পোর্ট্রেটে রিটাচ্,
পা ভাঁঙ্গা হাটা ছেড়ে, চার চাকা, ছয় চাকা,
…এসব হয় না আর;
মাঝে দূরত্ব ২৭৪ কিলোমিটার…
জাতীয় আড্ডাখানা উত্তর বাগান থেকে হা করে চেয়ে দেখা,
বেঙ্গল আর্ট গ্যালারিতে শাহাবুদ্দিন আহমেদের
মার্কিন ক্যানভাসের প্রচন্ড গতিশীল দেহ ছোঁয়া,
বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে ফ্রেন্চ, রাশ্যান, জ্যাপ্নিজ
নান্দনিক চলচ্চিত্র প্রদর্শনী উপভোগ…
আরজ আলী মাতব্বরের দীক্ষার দ্রাক্ষারসে কাঠ-মোল্লাদের ফেটানো,
লোকাল বাসের হেলপারের ‘ফারাম্গে’ ‘ফারাম্গে’ চিৎকার শোনা,
টোকাই বেজন্মা’দের মানুষের মত মানুষ করা,
…এসব হয় না আর;
মাঝে দূরত্ব ২৭৪ কিলোমিটার…
ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির মেরুন সিড়িতে বসে দক্ষিণের আকাশ দেখা,
চন্দ্রিমা উদ্যানের সবুজ কার্পেটের উপর
ফুলওয়ালীর হাতে গোলাপ অর্পণ,
‘গ্যালাক্সি’র নিভু নিভু আলোয় রবীন্দ্র সংগীতের অসম ফোঁয়ারা,
গ্র্যাফিক আর্টস ইনস্টিটিউট হোস্টেলে মাস কে মাস অজ্ঞাতবাস,
বাপে তাড়ানো, মায়ে খেদানো
বোহেমিয়ান যুবকের অন্তরঙ্গ বন্ধু হওয়া,
ওদের বাড়ির ছাদ, রাতের আকাশ, রঙধনু চাঁদনী
ওর গিটারে সেভেন্থ ইলেভেন্থ রিলেশ্যনে ‘বোসা নোভা’ রিদম্ আলাপ শোনা,
… এসব হয় না আর,
মাঝে দূরত্ব ২৭৪ কিলোমিটার থেকেই যায়…
বাংলা একাডেমির বই মেলা ছেড়ে,
ফুটপাতের ‘যেটা নিবেন ১০/২০ টাকা’র বিদেশী নভেল কেনা,
একটু উত্তরে শাহবাগের মোড়ে আর্টিস্ট বন্ধুদের সাথে তুখোড় আড্ডা,
টেলিগ্রাফ অফিসের ফোনে,
দলছুট বান্ধবীর সাথে কম পয়্হার রস আলাপ,
সংসদ ভবনের লেকের পাড়ে লম্বা চুলওয়ালা হিপ্পিদের সাথে,
সিগারেটের আগায় মোহিনী পাতার নীল সাগরের তরঙ্গ তোলা,
মিনারেল ওয়াটারের বোটলে,
হোয়াইট্ স্পার্কলিং ‘স্মারনফ্’ সাটাও হয় না আর,
এসব আর হয় না, হতে’ও নেই…
মাঝের ২৭৪ কিলোমিটার দূরত্ব – টেন্ডস টু জিরো হয়,
আর জীবনানন্দের কথাটা খুব মনে পড়ে…বিদিকভাবে মনে পড়ে,
‘আমার চিন্তা, প্রার্থনার সকল সময়, শূন্য মনে হয়, শূন্য মনে হয়…’
___________________________________________________________________
ভয়েড বিলবোর্ডঃ
হাংরিয়ালিস্ট গোছের এই লেখাখানি কেন্দ্রীয় ‘ঢাকা’ জীবনের, বিশেষত নব্বইয়ের দশক’কে ধারণ করে আছে যা কারো কারো লাইফ স্টাইলের সাথে নিঃসন্দেহেই যাবে না, তাদের কাছে আমার কোনো ব্যাখ্যা নেই, এসব নিতান্তই চাক্ষুষ চরিত্রের তেলেসমাতি যা কোনোমতেই অনুসরনীয় নয়… সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে তরুণ প্রজন্মের জন্য এটা একটি “তিরস্কারপত্র”… এটা কিছুটা ২৭৪ কিলোমিটার দূরের মফস্বলে বসে “অর্ধেক রাজধানী তুমি অর্ধেক কল্পনা”র ঘৃতাগ্নি স্মৃতিখসড়া… কারো কারো মনন ও নয়ন আহত হলে, দোষ এই লেখার প্রথম পুরুষের, আমার নয়…
2023-08-26