সে এক অন্ধকার রাত, আবহাওয়াটা কিছুটা ঠান্ডা,
শুক্লপক্ষের সে রাত সাথে নিয়ে এসেছিল ভয়াবহতা; তা এখনো অকথিত।
একদল নাফারমানের নারকীয় নৃত্য দেখেছিল সে রাত,
তবে ব্যাকগ্রাউন্ডে তবলা কিংবা ড্রামে বাজনা ছিল না,
ছিল মেশিনগানের হুঙ্কার, ট্যাংকের গর্জন, আর কতগুলা হতভাগার বৃথা আর্তনাদ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সেদিন শিক্ষালয় ছিল না,
এ বিশ্ববিদ্যালয় সেদিন জিন্দা কবরস্থান হয়ে গিয়েছিল।
সে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্য,
সর্বত্র লাশ, শোক করারও কেউ নেই,
তাদের বেদনায় একা, অসহায় ও নিঃস্ব হয়ে গিয়েছিল রক্তাক্ত মাটি।
পাকিরা নাকি বড়ই নিষ্ঠুর হয়,
বর্বর শব্দে হত্যা নয় সে যেন ছিল জল্লাদের উল্লাসমঞ্চ,
হায়েনার মতো ধর্ষণ নয় তারা যেন ছিল যৌন উৎসবে মাতোয়ারা,
বস্তু ভেবে,নগ্ন করে, কি-না করেছে?
সারারাত তাদের চিৎকার প্রতিধ্বনিত হয়,
গাছের পাতা থেকে ল্যাম্পপোস্টের ক্ষীণ আলোয়
কিন্তু এ শহর তখন বধির, এ দেশ তখন অন্ধ।
সেই রাতের রক্তের দাগ জগন্নাথ হলের দেয়ালে এখনো তাজা,
জহু হলের করিডোরটা স্বাধীনতার ডাকের মূল্য আমাদের মনে করিয়ে দেয়,
আর রোকেয়া হল মনে করিয়ে দেয় ইমানের নামে শয়তানের কারবারি।
ইউএস এম-২৪ ট্যাংকের দাগ আজও গভীর এ রাস্তায়,
না বুঝে মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন আজ জাতির আত্মায়,
এ ব্যথা কি কখনও ম্লান হবে?
নাকি হারিয়ে যাওয়া স্মৃতি সবসময় আমাদের ছায়া হয়ে তাড়া করবে?