Review This Poem

পরিত্যাক্ত ভাঙ্গা হৃদ প্রাচীরে পড়ে আছে ‍কিছু ধূসর স্মৃতি
দুঃখের আসর জমিয়ে স্বপ্নগুলো কাঁদছে রক্ত মাখা গায়ে
বিষাদের আঁধার গিলে খেয়েছে আমার সবটুকু আলো
জীবন বৃক্ষটি নুয়ে পড়েছে আকাশসম বেদনার ভারে

ক্ষুধার্ত কাকের মত সব দ্বারে দ্বারে ঘুরে ব্যর্থ হয়েছি
নোন লংক্কা মাখা দু’মুঠো ভাত আর এক পিয়ালা বিশুদ্ধ জলের বদলে
দেখেছি চাল ডালের আড়তে অসহনীয় অগ্নি শিখা
ডাস্টবিনে বাসী বিরিয়ানির মাতাল করা ঘ্রাণ

রাত জাগা শিয়ালের তান্ডব আর নৈশ ভোজ
আমের আঁটির মত কিভাবে চুষে আম জনতার রক্ত
দরিদ্রের বুকে মঞ্চ বানিয়ে নর্তকীর মত জালিমের নাচন
চৈত্রের মধ্যদুপুরে পুড়ে যেতে দেখেছি সবুজ মায়ের বুক

নিষ্প্রাণ শহরের ঝলমলে আলোয় অনেক পথ হেঁটেছি
আমি দেখেছি তাদের জঘন্য অমানবিক অবহেলার খেলা
আকাশ ছোঁয়ার প্রতিযোগীতায় মেতে উঠা অহংকারী দালান
রক্ত পিপাসুদের আয়োজিত হোলিৎসব আর সহস্র ফুলের আত্ম চিৎকার

পথের ধারে পড়ে থাকতে দেখেছি অসহায় বোনটির রক্তাক্ত জামা
দুঃখিনী মায়ের স্বপ্নের অর্ধগলিত পঁচা লাশের কিছু অংশ
রাতের আঁধারে দেখেছি মানুষ রূপী শয়তানের ভয়ংকর অবয়ব
কাচারী পাড়ায় দেখেছি অন্ধ আইনের চক্ষু দানের প্রতিশ্রুতি

কোকিল ছদ্মবেশী কাকদের অপবিদ্রোহের স্লোগান
দেখেছি রাস্তা অবরোধ করে ধর্মহীনদের সকাল সন্ধ্যা ধর্মঘট
পেট্রোল বোমার গন্ধে বিভোর আমার শহরের রাজপথ
ব্যক্তি নির্ধারণের অধিকার হনন ও মূর্খের সভাপতিত্বে বিচারশালা

পাগল ষাঁড়ের কপালে বেঁধে দিতে দেখেছি রক্তে রঞ্জিত কাপড়
পত্রিকার প্রতিটি পাতায় পাতায় কি করুণ আর্তনাদ
অঞ্জুনের ছালের মত ছাড়িয়ে নিতে দেখেছি সবুজ বৃক্ষের ছাল
নীরব দর্শকের মত দেখে যেতে দেখেছি জুলুম, অন্যায় আর অগণিত অত্যাচার

বাজপাখির চোখ দুটো ধার করে বিরামহীন হেঁটেছি বাংলার প্রান্ত থেকে প্রান্তিক
আটষট্রি হাজার গ্রামে তন্ন্য তন্ন্য করে খুঁজেছি রক্তে কেনা স্বাধীনতা
বাঙালির মুক্তির দূত ও মায়ের কোলের মত নিরাপদ আশ্রয় স্থল
হায়! রক্তে রাঙা লাল পতাকা ছাড়া আমি স্বাধীনতার চিহ্ন খুঁজে পাইনি!

guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments