কোথায় সেসব, অজস্র গীতিকবিতা, মনুমেন্ট, জ্ঞানীমার্জার, অজস্র ভ্রমরময় পত্র!
মৌরসিপাট্টা হাত থেকে উধাও তাদের! অনিশ্চিত রঙ নিয়ে খেলা করে একচক্ষু
দানব, আজ, অন্য এক নিঃসঙ্গ দস্তয়েভস্কি শুয়ে আছে খড়ে, চাপা কণ্ঠস্বরে, তার
হিম উক্তি—
কিরিলভ! এখনো কি রাত্রি নেমে আসে চিন্তার ওপর!
অন্য এক সিসিফাস ফিরে যায় তার ব্যক্তিগত পাথরের দিকে। আমি হিরামন
পাখিটিকে ছেড়ে দেই, রাতের পর্দা ওঠে, বলি, মৃত্যুই অতিথি, চিরন্তনতায় ছুটে
যায় অহংপাখি।
বজ্রনির্দেশিত পথ খুলে যাচ্ছে পাপড়ির মতো, নাকি এও কোনো তত্ত্ব অভিনয়!
ঈগলের বাসা খুঁজে, জহরের দানা খেয়ে এ গহন আমিত্ব ফুরায়।
গভীর সারেং আসে, পরিচয়পত্র কোথায় তোমার, বলে, জ্বলছে শরবন, তাকে দেখ,
খাগের কলম শুধু আনতে পেরেছি এবার, কত শোকাকুল পৃষ্ঠা উড়ছে রাতের
বাতাসে, তিতির পাখির রূপ ধরে এসেছে শিষ্যেরা, মহাবালুকায় অ্যালার্মঘড়িটি
পুঁতে রেখে অশেষ ঘুমের কথা ভাবছে সমুদ্র-প্রেত।
আর তুমি কিনা দাঁড়িয়ে রয়েছ চির-ধরা দেয়ালের সামনে, কয়লা হাতে, শরবনটিকে
এখন ভালগার মনে হয়। সমস্ত কুসুম, ঘাস, পাখি, পাখিব্রত, শিল্পপ্রহার, সবই কি
ভালগার! মনে করো, বহু রঙপেন্সিল হারিয়েছ তুমি ঘুমের ভিতর, একটি-দুটি করে
পারাবত নেমেছে উঠোনে, ওদের মতো সুখ্যাতির ধুলোমাখা একটু অন্ন আর কেলি
প্রয়োজন, আর কিছু নয়, আমাদের অপরূপ জট খুলে যাবে আয়নাব্যাখ্যায়,
চন্দ্রবিন্দু-ঘেরা কোনো গল্পরাক্ষসের আসরে মুক্ত হবে স্বর, সুর, আর সেই রঙের
দেবতা, যাকে অযথাই ভয় পেয়েছিলে, ছদ্মকাঠুরে এক, এসেছে ছড়াতে আজ ক্ষুদ্র
ক্ষুদ্র নভোসংকেত, নীরবে।