আমার শৈশবে শবে বরাত আর আব্বা পবিত্র হইয়া হাজির হইতেন। আব্বায় সমস্ত কাজকর্ম রাইখা আমাদের লইয়া থাকতেন। ঘরে হালুয়া আর রুটির মজমা বসাতেন। আমরা আব্বারে ঘিরা বসতাম। আম্মায় হালুয়া রান্ধেন। চাইলের রুটি বানান। হালুয়ায় তেজপাতার ঘ্রাণ নাকে আইসা পৌঁছতো। এইসব বাসনে নিয়া আয়েশ কইরা বসতেন আব্বা। আমি আব্বার মুখের দিকে চাইয়া থাকতাম অবুঝ শিশুর মতো। আব্বায় পরম আদরে একটা মুচকি হাসিতে মুখে হালুয়া সমেত রুটি তুলে দিতেন। সন্ধ্যা পার হইয়া রাত নামতো। গেরামের মসজিদে মসজিদে হুজুরের বয়ান আর ঘরের আমেজ মিইল্লা এক হইয়া যাইতো। মানুষের ঘর থেইকা পোড়া রুটি আর হালুয়ার ঘ্রাণ ছড়াইয়া যাইতো সারা গেরামে। সেই সময় আব্বায় আতর লাগাইয়া পুরো ঘরটারে ঘ্রাণে ও প্রাণে ভরপুর কইরা তোলতেন। আমাদের নিরবতায় একটা রুহানি আবেশ তৈরি হইতো ঘরে। অতঃপর আমরা নামাজে, মোনাজাতে, আল্লাহরে ডাকি। জায়নামাজ বিছায়ে শুভ্র দাড়ি মুখে বসে থাকেন আব্বা।
2022-09-12