কোন এক শ্রান্ত হলদে বিকেল, হয়তো আছর ওয়াক্ত
ক্লান্ত পথিক বেশে- ওযুর পানি খুঁজতে গিয়ে
নিজেকে আবিষ্কার করবো- আল-আকসার বারান্দায়, জেরুজালেমে!
ততক্ষণে আমি ভুলে গেছি সেই কবে ঘর ছেড়েছিলাম
আমি ভুলে গেছি দিন মাসের হিসেব!
আমার দৃষ্টিসীমায় রোদ ঝলসানো সোনালী গম্বুজ
তার পাশে কৃষ্ণকায় সেই আকসা!
হাঁটতে হাঁটতে কখন যেন পৌঁছে গেছি প্যালেস্টাইন!
কতদিন লাগলো? কত মাস? কত বছর? কত যুগ?
চোখের সামনে সোনালী গম্বুজ, কৃষ্ণ আকসা, পায়ের তলায় রুক্ষ মাটি
বাতাসে মৃদু আতরের সুবাস!
বারুদ কোথায়? গুলির শব্দে ঘুম ভাঙা শিশুর কান্না কোথায়?
শরনার্থী শিবিরে এক টুকরো রুটির আর্তনাদ কোথায়?
রক্ত কোথায়? কোথায় মানুষ পোড়া গন্ধ?
কানে বাজছে মৃদু আজানের ধ্বনি- আছরের আজান!
বাবার হাত ধরে নামাজে এসেছে ফিলিস্তিনি শিশুরা,
আকসার বারান্দায় খেলছে অসংখ্য বালকেরা
চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে এলো,
রুক্ষ ভূমি সিক্ত হলো দু’ফোটা লোনা জলে-
চোখের সামনে ভেসে উঠলো সেইসব দিন
কতবার হাত তুলেছি জায়নামাজে- কাঁদতে কাঁদতে বলেছি
❝আমাকে ঠিক ততটা সাহস দাও খোদা,
যতটা সাহস পেলে আমি বলতে পারবো,
জেরুজালেম আমার, জেরুজালেম আমাদের!❞
হঠাৎ ঘোর কেটে গেলো ইক্বামাতের সুরে
আমিও গিয়ে দাঁড়ালাম আকসার বারান্দায়, আছরের সালাতে
ততক্ষণে আমি ভুলে গেছি সব,
কি আমার নাম? কই আমার দেশ? কবে ঘর ছেড়েছি? সব!
হাঁটতে হাঁটতে কখন যেন পৌঁছে গেছি জেরুজালেম!
প্রথম ক্বিবলায় দাঁড়িয়ে কাবার দিকে মুখ-
মৃদু হাওয়ায় আতরের সুগন্ধী ছড়ানো হলদে আছর ওয়াক্ত
আমার জেরুজালেম,আমাদের জেরুজালেম!