যেমনি করে প্রতিটা মুহূর্তে ধেয়ে আসে মৃত্যু- খাবলে ধরে স্বরযন্ত্র- অসুস্থ গোঙানি; তেমনি প্রতিটা সূর্যাস্তে, কোষগুলো বরদাস্ত করে অসহিষ্ণু উত্তাপ! যেমনি করে কয়েকটা হলদে কমলার ত্বক চিঁড়ে, মুখগহ্বরে ছেবড়ে থেঁতলে বের করে রস- তেমনি সঙম শেষে অবশিষ্ট থাকে ফ্যাকাসে একখানি ছোবলা। তবু ফের চলে আসে সূর্যের আভাস-ক্যাভারনোসা বরাবর লাইন ধরে ছুটে যায় রক্ত- পুরনো অসুখ; হৃদয়ের সবুজ বারান্দায় দোল খায় অস্থির কতক পেন্ডউলাম ।
– “নারী –অক্রিয়, মর্ষকামী, নার্সিসিস্ট স্নায়ুমন্ডলী এক; ফ্রয়েড নাকি বলেছেন” ।
মর্ষকামী নারী নিতান্ত ধাঁতে সয় না; প্রেমিকার মুখ থেকে গলগল করে বের হবে নিকোটিন, ওঁঠ চুঁইয়ে বুদবুদে এলকোহল-আজকাল এমন প্রেমিকা চাই। স্বরযন্ত্র ছেঁড়া চিৎকারে নারীবাদের বুলি ঝাড়ি- আমি দর্শন ও সাইকোলজি কপচাই; তবু চার্জিত হলে সবিশেষে দৌড়াই এ্র্যাক আত্মকেন্দ্রিক নারীর কাছে; রাধিকা–প্রেমিকা-গণিকায় তফাৎ করি না; বিশেষ সময়ে খুঁজি না সাম্প্রদায়িক -অসাম্প্রদায়িক মিলনের সুখ ।
আহ!নারী; সঙ্গম সেরে সংযমে, পুনর্বার ফিরে আসি সাহিত্যের অকৃতদার দরজার কাছে ।
অনিন্দিতা, আর ভালো লাগছে না – এইসব সাহিত্য-ফাহিত্যে সব ছেড়ে দিয়ে চলে যাবো – এই পৃথিবীর সবশেষ হৃদয় – তোমার ভেতরের শাদা বাড়িতে কয়েকটা লাল-হলুদে ঝরে পড়ে ফোটন – চমৎকার নৃত্যকীয় ঢঙে – প্রত্যেক লহমায় সুষূম্নায় ভর করে, এ এক অস্থির পেন্ডুলাম।
আহ ! নারী; কি এ্যাক স্বল্পজীবী যৌবন, অদ্ভূতুড়ে কৌশলে ছ্যাপছ্যাপিয়ে ভেসে যায় সাদাসাদা ঘোড়াদের দলে। তোমার ছিপছিপে কটি, উত্তুঙ্গ নিতম্ব, কন্ঠনালী, একান্ত মুখ প্রত্যক্ষই ভেসে যায় বিস্তৃতির দিকে- আমি মনে করি আমার যাচিত প্রেমিকা, নারিমুখ-বুক এবং স্বর্ণকেশী যুবতীরা সব চেয়ে আছে আমার একমাত্র নিলজ্জ্ব কামনার দিকে।
-অনিন্দিতা! তোমার অত্যাশ্চর্য ক্ল্যাভিকল, বিস্তারিত পর্শুকায় অন্ধকার- হৃদয়ের পাশ খুঁজে অজস্র ব্যর্থ-বোবা রোববার এসে পড়ে। রাস্তায় বাতিরা নিভে গ্যালে বস্তিদেশে(মতান্তরে মস্তিষ্কে) এ্যাক অযাচিত সঙ্গম ভর করে- বিজলীরা ছুটে যায়, ইশারায়। মুক করা মুখ, যোনী, স্তন আবৃত করে হৃদয় এক-স্যাঁতস্যাঁতে সাদা বালিশের পাশে, অঘোরে ঘুমিয়ে থাকি- রাতগুলো যেন করোটিতে অসহ্য কম্পন নিয়ে আসে-
বাহ! এক অগভীর লহমায় ছুটে যায় অপূর্ব বিজলী,
আহ! আছড়ে পড়ে প্রতিটা কোষে- অস্থির এন্ড্রোজেন সব, অন্ডথলি ভরে আসে, চ্যাটচ্যাটে সুক্রোজে।
আমি হৃদয়ের কাছে বলি একহাতে এতোখানি কবিতা আর কতখানি যৌবন আঁকড়ে পুড়ে দেয়া যায় সর্বগ্রাসী মুখগহ্বরে। এ জীবন, এ হৃদয়, কত সঙম সে কল্পনা করে গ্যাছে জীবনে, সমুদ্রে -হৃদয়ের পাশে। তবু পৃথিবীর প্রতিকুল বাতাবরনে পাখিরা ডানা ম্যালে -রাত আসে, হামাগুঁড়ি দিয়ে শীত নামে, ফ্যাঁড়ফেঁড়ে তরতাজা পৃথিবীর ‘পরে-কাপড়ের ভেতরে উত্তাপ জমে, সি-এস-এফ’এ মুখগুলো ভেসে ওঠে, প্রেমিকার তরে- ফুলগুলো মরে যায়, রক্তাক্ত হয় ক্যাভারনোসা- আটকে পড়ি- লাল নীল মাছেদের মতো, খাবি খাই পৃথিবীর অকারিয়্যামে। যখন পৃথিবীর বুকে চাঁদ নেমে আসে-ঝরে যায়, থকথকে হাত বেয়ে সাঁসাঁ করে নেমে আসে জ্যোৎস্না– প্রেমিকার সবটুকে বাষ্প হয়ে যায় হেমিস্ফিয়ারে, চাঁদরের নিচে নির্লিপ্ত, অবশ–দম বন্ধ হয়ে আসে; থিতিয়ে পড়ি, কলয়েড যেমন-
জীবন এসেছে যখন, আমাদের তরে –
আরো কতো মৃত্যু; শেমমেষ পাখিরাও মরে –
উড়ে যায়;
নীল মাছ এসে বসে, দানাবেঁধে সঙ্গমেরাও আসে- পাখনায় ভালোবেসে মরে-পৃথিবীতে;
বারবার ফিরে আসি, এইখানে-
মধু আর মিলনের তরে, তবু –
পুনর্বার ক্যানো নষ্ট হই; প্রভু ।
সব চলে গ্যাছে ,
দিনগুলো, বেলান্ত করে সবে-রাত নেমে এল ,
জিজ্ঞাসি তারে –
অনিন্দিতা, প্রথম সঙমের আগে কে- মরে যায় বলো !