4.3/5 - (7 votes)

বাবার কখনো লোকদেখানো স্বভাব ছিলো না, দুঃখদারিদ্র তিনি ট্রাংকে পুরে রাখতেন পুরনো লেপের সাথে- কারো সাথে দ্যাখা হলে হাসিমুখে বলতেন, ‘আছি ভালো’- মেসতাপড়া বাদামিরঙের দাঁতগুলো দেখা যেতো।
সবসময় চিন্তায় থাকতেন শীতকালে মারা গেলে গ্রামের লোকজন যদি ছেঁড়া সোয়েটার গায়ে দ্যাখে- শীতের কার্ডিগানটা উনি পাড়তেন না, বলতেন ‘মরে গেলে পরিয়ে দিস’, শীতগুলো যাচ্ছিলো কেটে, ছাত্ররা পিছনে নাম দিয়েছিলো কেশোমাস্টার- লোকজন বলতে গেলে ‘মাস্টার সাহেব’, বাবা বলতেন ‘উঁহু শীত তো অতো না, শীতকালে যদি কাশিই না হয়….’
এইভাবে লাঠিতে ভর দিয়ে বাবা চলছেন যেন আমৃত্যু একটা বটগাছ দাঁড়িয়ে আছে তিনরাস্তার মোড়ে, ইদানীং আর শীত লাগে না একদম- একদিন ট্রাংক খুলে দেখলেন তার সাধের কম্ফোটারটা ইঁদুরে তিনঠাঁই কেটেছে- কম্ফোর্টারের শোকেই দুদিন পরে বাবা মারা গেলেন- আমাদের সামর্থ্য ছিলো না, তার শবযাত্রা বেরোলো তিন জায়গায় ছেঁড়া কার্ডিগান গায়ে।

guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments