Review This Poem

সুনির্দিষ্ট রাস্তাটি দৃশ্যমান হলো,
অদিতি পরিমাপহীন উত্তেজনা ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাত্রা শুরু করতে যেয়েও থেমে গেল…
এ রাস্তা তো অদিতির একার নয়, শহরের হাজারো অচেনা মানুষ রাস্তা মাড়িয়ে হাঁটছে …..
একটা ঠিকানা বিহীন পরিচয় নিয়ে শহরের সঙ্কর বাতাসেই শিউরে উঠছে অদিতি,
কোন ঝড়, তুফান নয়
গর্ভের উষ্ণতা থেকে পরিবার পর্যন্ত বৃহৎ মায়া বৃত্তের ব্যাসার্ধ পরিমাণ তিক্ততা, ক্রোধ নিয়ে পরিবার থেকে নিজ থেকেই হারিয়ে গেছে অদিতি।

প্রেমিকের প্রেম প্রেম আদিখ্যেতায় ষড়যন্ত্রের গন্ধে বিশ্বাসের দরজা দরাম করে বন্ধ করে ঘরের ভেতর দেখে বিয়ের সার্কাস….
প্রতিদিন পাত্র পক্ষের সামনে একটা সম্ভ্রান্ত যৌনকর্মী হিসেবে উপস্থাপন করার এই সংস্কৃতি একটা অসহ্য জীবন কষ্ট!
এই জীবন কষ্ট থেকে মুক্তির সন্ধানে নিজস্ব যুদ্ধ চলে অদিতির…
এরপর…
এরপর চেতন অবচেতনের একটা ঝড় সত্যিই ঘটে যায়,
সেই ঝড়ে নিজেকে সাথে নিয়ে হারিয়ে যায় অদিতি।

স্বল্প জমানো টাকার বিপদ সংকেত নিয়ে হাঁটা শুরু করলো অদিতি…
দূর্বল ভিত্তি নিয়ে ঘরের সন্ধান, অল্প বেতনের চাকরি, পুরুষ জগতে প্রয়োজনীয় অঙ্গ ভঙ্গির অভ্যাস এই পথের ই অংশ…
জাদুকর অথবা জাদু কিছুই এখনো পাওয়া যায়নি।
উপকার এবং লালসার পার্থক্য শক্ত পরীক্ষায় নির্ণয়ের পর অনেক গুলো পুরুষ ডিঙিয়ে অবশেষে পুরুষ বাচক জগৎ থেকে বেরিয়ে আসা,
উন্মোচিত রাস্তায় প্রথম শুদ্ধ পরিচয় হয় একটি কাকতাড়ুয়ার সাথে,
বুদ্ধি নেই বলে করপোরেট সমাজে আঘাতের পর আঘাত খাওয়ার পর সিদ্ধান্ত নিয়েছে এই রাস্তা দিয়ে চলার,
জাদুকর তাকে বুদ্ধি দিবে;
সেই বুদ্ধি দিয়ে একটা নতুন পরিচয়ে, পুনর্জন্মে খুঁজে নিবে কোন পৃথিবীতে বুদ্ধিহীনেরা সুখে শান্তিতে থাকে।

কাকতাড়ুয়া আর অদিতির জাদুর অনুসন্ধানে পরিশ্রান্ত পর্যায়ে দেখা মিললো ফ্রাঙ্কেস্টাইনের ইবলিশের সাথে,
মমত্ববোধ রক্তাক্ত করে যে পশুত্বকে করেছে বরণ…
হয়তো এখনো সময় আছে আবারও মানুষ হয়ে জন্মানোর,
এখনো অপরাধের খাতা কবর মুখো হয়নি,
ও ভালো হতে চায়, ভালোবাসতে চায়..
জাদুকর তাকে ভালোবাসার সূচনায় নিয়ে যাবে।

জাদুকর এলেন একটা চার বছরের শিশুর বেশে
অথবা শিশুটি একটি জাদুর বেশে,
ফুল বিক্রি করতে এসেছে…
পিতৃহারা, মাতৃহারা শিশুটিকে কোলে নিয়ে আত্মতৃপ্তিতে চলে গেল অদিতি,
মাতৃত্বের জাদু পেয়ে গেছে অদিতি।

এক বাউলের দোতারার জাদু কাকতাড়ুয়াকে কাছে টেনে নিয়ে যায়,
সঙ্গীতের পথে অবলম্বন পাওয়ার তৃপ্তি নিয়ে কদম ফেলে
বুদ্ধিহীনদের পৃথিবীর খোঁজ পেয়ে গেছে কাকতাড়ুয়া।

ভ্রূণমোচনের সিদ্ধান্তে শেষ পর্যন্ত অটল থাকতে না পারা মেয়েটি কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে আসে হাসপাতাল থেকে,
পিতার স্বীকৃতি থেকে বঞ্চিত সন্তান বয়ে বেরানো মেয়েটিকে জাদুর মতো মনে হয় ইবলিশের…
ফ্রাঙ্কেস্টাইনের সকল ঘৃণা মুছে ইবলিশ ভালোবাসা পেয়ে গেছে।

guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments