বাংলা কবিতা, একজন মঞ্জু মিঞা কবিতা, কবি ইফতেখার নুর - কবিতা অঞ্চল
4/5 - (1 vote)

চাকরিটা শেষমেশ গেছে,
তবু ক্লান্তহীন আমি অবশেষে।
রোজ বুক ভরা হতাশা,
মন ময়ার টান,আর ভালোবাসা,
এসব নিয়েই ছুটে চলেছি,
দিগবিদিক,যেনো এক মৌমাছি।

মানুষ কে ভালোবেসে,
মানুষের জন্য কিছু করতে চেয়েছি।
এটাকেই উছিলা বানিয়ে,
তারা আমাকে দিয়েছে তাড়িয়ে!

তাদের লজ্জা বলতে কিছু আছে?
না থাক,বিপদে পৃথিবী নগন্য,শোনা আছে!
অপরাধ আমার অনেক,কাড়ি কাড়ি,
সুযোগ ফেলেই কাজে পল্টি মারি।
আসলে ওটা আমার জন্য করিনি,
তোমরা সেটা কখনো বোঝোনি,
বরং বুঝতেও চাওনি।
তোমরা কী বুঝবে,
কেমন করে বুঝবে?
টাকায় বিক্রীত পৃথিবীতে,
সব ভুলে,আরো একটা ধর্ম যে আছে,
“মানবধর্ম” নাম দিয়েছি তার,
যেখানে নেই ভেদাভেদ আপন পর,
কেনো,কেমন বা কে কার!

চাকরি টা গেছে,
মেঘ গুলোও সব সরে গেছে,
দিনশেষে পরে থাকি একা,
বোধয় আমিই ভবের শ্রেষ্ঠ বোকা!

মানুষ গুলো এত বেপরোয়া কেনো?
তার মা’র অপরাশনে,
“ও নেগেটিভ” রক্ত লেগেছিলো,
রাত তিনটা বাজে ফোন এলো,
বসের পার্সোনাল নাম্বার থেকে,
তার গলাই ভাঙ্গন ধরেছে,
মানুষ টা হাপাচ্ছে।
বললাম আমি আসছি,
সাথে ডোনার ও আনছি।
সে রাত আমি মনে রাখিনি,
কারণ,নিত্যদিন যা করছি,
এবং মানবধর্মের অংশ হিসেবে যা করছি,
সেটা মনে করিয়ে,
ফায়দা ওঠানো টা কেমন যেনো বোকামি।

আমার এসব উৎকট বাতিকের কারণে,
প্রিয়সীর বাবা’র স্ব-পছন্দে,
প্রিয়াসী তার হ্যা-গোমরানো মতামতে,
টাকা ওয়ালা টাকলার সাথে ভেগেছে।
অথচ কথা ছিলো,
একদিন আমার সাথে সেও,
রক্তের ক্যাম্পেইনিং এ যাবে,
একসাথে দুই বেডে শুয়ে,
দুজন মিলে রক্তদান করবে।
অথচ সেদিনকার কথার,
আজ নেই কোন প্রমাণ।
আজ আমি ভিত্তিহীন,
উদ্দেশ্যহীন এবঙ অর্থহীন।

বাবা নাকি আর পারছে না,
হাত খরচের টাকাটা আসছে না।
মা সারাদিন চুপচাপ থাকে,
মাঝেমধ্যে প্রলাপ বকে!

এতকিছুর পরেও আমি ক্লান্তিহীন,
হ্যা,আমি অর্থ-বৃত্তহীন,
তবু এসমাজের কুকুর রূপী মানুষ আমি নই,
কুকুরগুলো ঘুষ খায়,
আমি কখনো এসব করি না,
আমার করতে হয় না।
টঙের চা-সিগারেট,কোনমতে পুষিয়ে নিই,
বাবার হোটেল আর মা’ তো আছেই।

তবে আমার হঠাৎ করে,
অনেক টাকার প্রয়োজন পরে,
সবসময় নই,মাঝেমধ্যে,
আমার জন্য নই,মানবধর্মের জন্যে।
ওই যে পথে হটাৎ করে দেখা হয়,
মেডিকেলে কয়েকরাত কাটাই,
পরে সেই কুড়িয়ে পাওয়া,
ভাই-বোন,বা-মা কে,
পৌঁছে দি ভালো একটা ঠিকানায়,
বা তাদের স্বজনদের কাছে।
আমি কোন নেশা করি না,
তবু মানুষ আমাকে ছাড়ে না,
এত রাত করে এই ছেলে,
কী করে বাড়ি ফেরে?
নেশা-ছিনতাই এসব করে না তো?
ফেইসবুকে দেখি,অন্যের জন্যে
সাহায্য চাই,রক্ত খোঁজে!
আসলে কী সে এসব করে?
নাকি এসব নাম করে,
টাকা হাতিয়ে নেশা-পানি করে?
হাজার প্রশ্ন,আরো কী কতো?

পাশের বাসার আন্টির মন্তব্য,
কচি বাঘের মত হিংস্র!
অথচ সে আন্টিই,
আবার আমাকে ফোন দেয়,
ফোন দিয়ে বলে ‘বাবা’,
আমার ছেলে গ্রুফিং রাজনীতির ফলস্বরূপ,
পুঁদে ছুড়ি খেয়েছে,
প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে,
রক্ত লাগবে,একটু দেখো না “বাবা”!নেশাখোর,ছিনতাইকারী বানানো মহিলা,
আমায় ডাকছে “বাবা”!
কী উত্তম প্রতিশোধ,আহা।

guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments