– বাইরে তুমুল বৃষ্টি হচ্ছে।
এমন ঝড়ের দিনে তোমার কোলে মাথা রেখে সুখ কিনতে মন চায়।
(চলো, আমরা বৃষ্টিতে ভিজি।)
– হা হা হা। এইসব ঝড়ে আমার কোনো সুখ নেই বিশেষ
রকমের।
আমার কাছে এই বর্ষাকালরে প্রকৃতির জারজ সন্তান
সন্তান লাগে।
আমি তোমাকে যতটুকু ভালোবাসি ততটুকু ঘৃণা করি
এইসব বোশেখি ঝড়
কিম্বা বেপরোয়া বাতাস। তোমার কথাগুলারে যে পরিমাণ
গুরুত্ববহ মনে করে
হৃদয়ে লিখে রাখি ঠিক ততটুকু অবহেলায় ভুলে যাই
বর্ষারে নিয়া বাংলা কবিতার
অহেতুক মিথ্যাচার।
বিশ্বাস করো, আমি কখনোই বাদলা দিনে আম কুড়ানোর
সুখ পাইনি; কারণ
আমাদের বেড়ার ঘর ডুবে যেত বলে সাইক্লোন সেন্টারে
শেলটার নিতাম।
আমি কম্পিত লোচনে দেখতাম প্রতিটি বৃষ্টির ফোটার
সাথে মিশে যাওয়া
মায়ের দিল চুঁয়ে পড়া দুঃখ। (তোমরা তখন রবি ঠাকুরের
ফাজলামো
আওড়াইতে পরম সুখে কিম্বা চুমু খাইতা গরম চায়ের
কাপে।)
একিন করো, আমি বর্ষার গুষ্টিরে গালাগালি করে আসছি
বিগত প্রতিটি বছরে
তবে আজ কেন শুধু তোমার লাগি তার বন্দনা করব?
তোমাকে এক শীতের
বিকেলে বলেছিলাম, আমার দেশের বাড়িতে এক কৃষাণী
ছিল যার চোখ
তোমার চোখের মতোই নিষ্পাপ, সুগভীর আর স্বচ্ছ।
তারে তো এই হারামজাদা
বর্ষাই ভাসিয়ে নিয়ে গেছিল তারাদের দেশে। তার পঁচা
মাংশের গন্ধও মনে হতো
মাতম ছড়ানো মদের গন্ধের মতন।
আমি বর্ষার গতরে লেগে থাকা অভিশাপ দেখি রাতবিরাতে
প্রতি দুঃস্বপ্নে
আমাদের বিপরীতে।