ভাষারও রঙ আছে
আমার ভাষা, টকটকে লাল রক্তভাষা
কৃষ্ণচূড়ার রঙ ফুটে উঠেছিলো রক্তভাষায়
সেদিনের বিদ্রোহী ফাল্গুনে।
এ ভাষার কোনো রঙ ছিলো কি?
হয়তো শুধু কালো অক্ষরের নিথর শব্দাবলি
কণ্ঠে জড়িয়ে ছিলো বাংলা মায়ের।
ভাষার ভুবনে তখনো ফাগুন ছিলো না
তবে আগুন জ্বলছিলো ক্ষণে ক্ষণে
কৃষ্ণচূড়ার রঙ দেখেনি কেউ ভাষার রঙে
বসন্তের আকাশে উড়েনি ভাষার প্ল্যাকার্ড
স্লোগান দিতে শিখেছে মিছিলে মিছিলে
এমন বিদ্রোহী ভাষা কেউ দেখেনি।
হঠাৎ কি হলো একদিন-
ফাগুনের আগুন জ্বলে ওঠে
রাজ পথে ভিড় হয়
অকুতোভয়
বুকের রক্তে জন্ম নেয় পরশ পাথর
কালো বর্ণমালা ক্রমশ লাল হয়
বুলেটের মুখোমুখি ব্যারিকেড দেয়
কালো অক্ষর এবং সেই নিথর শব্দাবলি
নিজেকে রাঙিয়ে নেবে শোণিত সমুদ্র থেকে
ভাষার স্লোগানে বিদীর্ণ আকাশ
বুলেটের সুরে আরো ঝাঁঝালো হয়
মুহুর্তেই কয়েকটি কালো অক্ষর লুটিয়ে পড়ে
বুকের জমিন থেকে বেরিয়ে আসে রক্তভাষা
একুশের মধ্যদুপুরে তখন ঝরছিলো ভাষার আগুন
পুড়ে ছাই হয় প্রতিহিংসার দানবীয় অপভাষা।
তারপর আবার একদিন-
সেই পরশ পাথরের ছোঁয়ায়
বর্ণিল বর্ণমালা আর রক্তভাষা
আমার মায়ের কন্ঠে শোভিত হয়
সুবর্ণ মণিহার।