4.5/5 - (2 votes)

অরণ্যের পাথর চাপায়

বেড়ে উঠেছে আমাদের সভ্যতা,

প্রগতিশীল সুশীল আমরা 

দাবি করতেই পারি-

পাঁচশত কোটি বছরের

বয়োজ্যেষ্ঠ পৃথিবীর,

এ যাবত আমরাই সর্বেসর্বা 

আধুনিক-আধুনিকা।

 

অথচ আমাদের আধুনিকতা যে

চির ধরিয়েছে অরণ্যে,

বিলীন করেছে-করছে

শত-শত প্রজাতির 

লতায় লতায় জড়ানো প্রেম,

বিলুপ্তপ্রায় প্রজাতির পর প্রজাতি।

 

প্রযুক্তির বাড়াবাড়ি

অথবা সভ্যতার অসভ্যতা যাই বলি,

পাহাড় করেছে সমতল

মৃত্তিকা হচ্ছে লুণ্ঠিত

জারজের দল করছে কেবল 

জননীর মাংস চুরি।

 

স্রোতস্বীনী প্রবাহ হারিয়ে

শুকনো মৃত প্রায়,

সমুদ্রের বুকে প্রযুক্তিক বন্য ঘোড়া দাপিয়ে বেড়ায়, বর্জ্য ছড়ায়।

 

যন্ত্রের পূজারী মানব-মানবী

চোখ খুলো,তাকাও

তাকিয়ে দেখো-

আকাশ পুড়ছে উষ্ণ দহনে

শূন্যতায় জমেছে কত ধুয়া!

বাতাস ভরে আছে বিষে

বেপরোয়া মানবীয়-

পাখি হবার স্বাদে।

 

মানবিক স্বাদের

এ বিষাক্ত ছোবলে,

নিরাপত্তা বেষ্টনী ওজোনও

দাঁড়িয়ে ধ্বংস দোয়ারে।

 

পাখি হবে, হয়ে যাও

চমৎকার ইচ্ছে!

তবে দোষ কি ঐ পাখিদের?

যারা পাখি হয়েই এসেছে,

কেন তারা পড়বে মারা?

ঝাঁকে ঝাঁকে- রেডিয়েশনিক অস্ত্রে।

 

প্রিয় আধুনিক-আধুনিকা,

প্রকৌশলীক উন্নতি 

যন্ত্রীয় এই বর্বরতা,

কোথাও ছাড় দেয় নি-

নদী-সমুদ্র আকাশ-অরণ্য

সর্বত্রই তার ত্রাসের রাজত্ব,

সফলতা স্বরূপ বিলুপ্তি

নিরিহ প্রাণিকূল-উদ্ভিদরাজি।

 

অতঃপর, বিচারের কাঠগড়ায়-

যদি তারাও দাঁড়ায়,

আইনী প্রক্রিয়ায় হয় ফরিয়াদী,

আমরা আধুনিক-আধুনিকা 

কথিত মুক্তমনা,

তখনও কি তাই থাকি?

এমন যেন না হয়

দন্ডাদেশ আমৃত্যু ঝুলিয়ে ফাঁসি।

অহ! তখন আবার মৃত্যু কি?

অনন্তকাল যদি ঝুলেই থাকি!

 

ওসব থাক,

কবির কল্পনা ভেস্তে যাক।

আমাদের সভ্যতা-

দালান সভ্যতা

শহুরে পিচঢালা রাস্তা।

আমাদের সভ্যতা-

তেজস্ক্রিয় অগ্রযাত্রা

প্রযুক্তির পৈশাচিক সফলতা। 

 

সভ্যতার  উচ্চারনে

‘সভ্য’ শব্দের আগে চলে আসা-

কেমন জানি খাপছাড়া  অবস্থা।

আমরা সভ্য হলে- অসভ্য শব্দের,

মিছে কেন টিকে থাকা!

আমরা অবশ্য অসভ্যও না

শব্দটা ঝাঝালো, অনেক কড়া 

কানে বাজে, গাঁয়েও লাগে।

guest
0 Comments
Newest
Oldest Most Voted
Inline Feedbacks
View all comments