নকশী কাঁথার মাঠ – ৮
বিয়ের কুটুম এসেছে আজ সাজুর মায়ের বাড়ি,কাছারী ঘর গুম্-গুমা-গুম্ , লোক হয়েছে ভারি।গোয়াল-ঘরে ঝেড়ে পুছেসম্পূর্ণ
নকশী কাঁথার মাঠ ১৯২৯ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত বাংলা সাহিত্যের একটি অনবদ্য আখ্যানকাব্য। বাংলা ভাষায় রচিত এই আখ্যানকাব্যের লেখক বাংলাদেশের পল্লীকবি জসীম উদ্দীন।
বিয়ের কুটুম এসেছে আজ সাজুর মায়ের বাড়ি,কাছারী ঘর গুম্-গুমা-গুম্ , লোক হয়েছে ভারি।গোয়াল-ঘরে ঝেড়ে পুছেসম্পূর্ণ
নতুন চাষা ও নতুন চাষাণী পাতিল নতুন ঘর,বাবুই পাখিরা নীড় বাঁধে যথা তালের গাছের পর।মাঠেরসম্পূর্ণ
“ও রূপা তুই করিস কিরে? এখনো তুই রইলি শুয়ে?বন-গেঁয়োরা ধান কেটে নেয় গাজনা-চরের খামার ভূঁয়ে।”“কিসম্পূর্ণ
রূপাই গিয়াছে ‘কাইজা’ করিতে সেই ত সকাল বেলা,বউ সারাদিন পথ পানে চেয়ে, দেখেছে লোকার মেলা।কতসম্পূর্ণ
একটি বছর হইয়াছে সেই রূপাই গিয়াছে চলি,দিনে দিনে নব আশা লয়ে সাজুরে গিয়াছে ছলি।কাইজায় যারাসম্পূর্ণ
আজো এই গাঁও অঝোরে চাহিয়া ওই গাঁওটির পানে,নীরবে বসিয়া কোন্ কথা যেন কহিতেছে কানে কানে।মধ্যেসম্পূর্ণ
আষাঢ় মাসে রূপীর মায়ে মরল বিকার জ্বরে,রূপা সাজু খায়নি খানা সাত আট দিন ধরে।লালন পালনসম্পূর্ণ
ঘরেতে রূপার মন টেকে না যে, তরলা বাঁশীর পারা,কোন বাতাসেতে ভেসে যেতে চায় হইয়া আপনসম্পূর্ণ
আশ্বিনেতে ঝড় হাঁকিল, বাও ডাকিল জোরে,গ্রামভরা-ভর ছুটল ঝপট লট্ পটা সব করে।রূপার বাড়ির রুশাই-ঘরের ছুটলসম্পূর্ণ
চৈত্র গেল ভীষণ খরায়, বোশেখ রোদে ফাটে,এক ফোঁটা জল মেঘ চোঁয়ায়ে নামল না গাঁর বাটে।ডোলেরসম্পূর্ণ
ওই গাঁখানি কালো কালো, তারি হেলান দিয়ে,ঘরখানি যে দাঁড়িয়ে হাসে ছোনের ছানি নিয়ে ;সেইখানে একসম্পূর্ণ
এক কালা দতের কালি যা দ্যা কলম লেখি,আর এক কালা চক্ষের মণি, যা দ্যা দৈনাসম্পূর্ণ
বন্ধুর বাড়ি আমার বাড়ি মধ্যে ক্ষীর নদী,উইড়া যাওয়ার সাধ ছিল, পাঙ্খা দেয় নাই বিধি।— রাখালীসম্পূর্ণ